পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* • ঝিলে জঙ্গলে শিকার। কিছু দিন আগে আর একটি দুর্ঘটনার কথা আজও ভুলতে পারিনি। ভাগ্যবলে আমার ঘাড়ের বদিকে একটা জোর চাপড় ছাড়া বিশেষ কিছু লাগেনি। দোষের মধ্যে না জেনে শুনে আমি আগ্রা অমর একজন বড় কর্মচারীকে শিকারে নিয়ে গিয়েছিলাম। একটা মাইপ উড়ে উঠল। সে ব্যক্তির শিকারের ধরণ দেখে আমি একটু পিছু হয়েইছিলাম। গুলি আমার গায়ের চামড়ায় ঢুকতে পারেনি সত্যি, কিন্তু আমার কোট আর কামিজের আস্তিন দুই ফুড়ে ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল। ছেলে বেলায় পাঠশালে গুরু মশায়ের চড়টা চাপড়টা লভ্য হয়েছে। বলা বাহুল্য সে স্পর্শ একেবারে “পরিশীলন কোমল মলয়সমীরে নয়। স্বয়ং তার পুনরাভিনয় আর কামনা করিনে। তবে এই সব বীর প্রকল্পে গণ্ড দেশে তার পুনরাবৃত্তি দেখলে মনটা বেশ একটু উৎফুল্ল হয়ে উঠতে পারে সন্দেহ নাই। | তাম খুলতের দৃষ্টান্তে আমরা তাকে boy বলে ডাকতাম। আইরিশ বংশজাত ছেলেটি দেখতে বড় সুন্দর ছিল। বিলাইতী ব্যারিষ্টার, শিকার ক্ষেত্রে না হলেও অন্যত্র খুল্লতাতের বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল। গাজর ক্ষেতে Partridge মারতে গিয়ে তিনি একবার গুলি দিয়ে boy এর পায়ের ডিমের গভীরতা পরিমাপ করে দেখবার চেষ্টা করেছিলেন। দৈবাৎ আইরিশ রক্তপাত হয়েছিল সত্যি, তবু boy সুবিধা খুজতে লাগল। প্রায় আশী গজ দুর হতে ভ্রাতপুত্র পিতৃব্যেরু খােস-মেজাজের দানের প্রতিদান দিতে ভুললনা। আর একই সঙ্গে যে Partridgeটা সারাদিন ধরে কোটের পকেটে করে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল, সেটি যতদূর সম্ভব সেইদিকে ছুড়ে ফেলে দিলে। ক্রীড়াক্ষেত্রে কিম্বা ধর্মাধিকরণে যেখানেই থােক দুখানি নির্মল হাত নিয়ে আসা কর্তব্য। এই হচ্ছে নৈতিক বিধান। Boy সেই মহাজন পন্থা অনুসরণ করে, আমার মতে উচিত কাজই করে ছিল। আমার বালক বয়সে, আমি একবার অভিজাত মৃগয়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অভিযান করে, কোন রূপে হত্যাকাণ্ডের হাত এড়িয়ে এসেছিলাম। তারপর হতে ঘরপােড়া গরুর রক্তসন্ধ্যায় ভয়ের মত আমি এ বিভীষিকা বাচিয়ে চলি। প্রায়ই এই রকম জাঁকাল শিকারে আর যাইনা। এ রকম জায়গায় পিছিয়ে পড়ে থাকতে হয়। যাদের পদপদবী বড়, তারাই ভাল জায়গাগুলি অধিকার করে বসেন। আর শিকারীরা মনােযােগের সহিত নির্ভুল ভাবে সেই দিকেই সব শিকার তাড়না করে প্রেরণ করে। ঘাস শিকার। অনেক দিন দারুণ রৌদ্রে মাইপ শিকারের পর আসন্ন শীতের স্নিগ্ধ দিনগুলি যখন হাঁস শিকারের সম্ভাবনা নিয়ে আসে তখন আরামের নিশ্বাস না ফেলে পারা যায় না। মানস সরােবরের যাত্রী এই সব হংস কাণ্ডব স্বল্পদিনের প্রবাসী, এদের শিকার-সৎকার তাই দীর্ঘদিন স্থায়ী হয় না। এখন দেখছি সংখ্যায় এরা দিন দিন হ্রাস হয়ে আসছে। পূর্বে আমাদের নিকটবর্তী ঝিলে আর বিলে এই জাতীয় পাখীর মেলা বসে যেত। হাঁস, লাল সেক্স, পিইংহাস, নীলশীর আরাে যে কত জাতের চিত্র বিচিত্র “বিহঙ্গম স্বর্ণ বর্ণ কেহ” তাদের বর্ণ ও জাতি গণনা ও বর্ণনা করা কঠিন ছিল। শীষ-দেওয়া Teal কিম্বা Teal ঘঁসদের দিকে আমরা চোখতুলে দেখতামই না। নীল-পাখা নীল, এমি ঝাক বেঁধে এত বেশী সংখ্যায় উড়ে উঠত, তাদের পাখার শব্দে মনে হত বুঝি একখানা সীমায় আসছে। সন্ধ্যার গােধূলি লয়ে, কণে বউএর মত লাল পােপরা লাগসেরা বাড়ীর কাছ