ঝিলে জঙ্গলে শিকার - করে দাঁড়িয়েছিল। দাড়ি মাঝির সাধ্য কি যে নৌকা বেয়ে আসে। এ মােষের পাল তত সুবােধ বালকের ফল নয় যে তাদের বুঝিয়ে পড়িয়ে কিছু সুবিধা হবে। তাই যতক্ষণ এই মহিষাসুরগুলি আপনাহতে পথ ছেড়ে না দিলে, ততক্ষণ মহিষমর্দিনীকে ভােগের জন্যে মুখটি বুজে প্রতীক্ষা করে থাকতে হয়েছিল। এখন আর সে জলাভূমি নেই। বিলগুলি মাঠ হয়ে তাতে চাষবাস চলছে। মহিষাসুর ও তার মােসাহেবের দল নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। পাহাড়তলীর বনজঙ্গলে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসের অসহ্য গ্রীষ্মে বাঘেরা প্রায়ই নালায় গিয়ে পড়ে থাকেন তবে ভিন্ন কারণে মানুষে যে কারণে নালার আশ্রয় গ্রহণ করে, এখানে তা নয়। আমরা যেমন গরমের দিনে নাইতে নামলে আর উঠতে চাইনে, তেমনি আর কি। ১লা সেপ্টেম্বর ১৯১৭ খৃঃ।। তােমাদের একটা কথা বলা ভাল। পায়ের চিহ্ন দেখে বাঘ কি বাঘিনী বুঝে নেওয়া যায়। চিতাদের সম্বন্ধেও এ কথা খাটে। বাঘের দাগ অনেকটা চৌকাগড়নের ; বাঘিনীর তা নয়। গােল বাধে কখন জান?-~-বাচ্ছাদের বেলায়। তাদের পায়ের দাগ দেখে বাঘ কি বাঘিনী বুঝে নেওয়া দায়। কিন্তু একটি সহজ উপায়ে এ সমস্যার মীমাংসা করা যেতে পারে। পায়ের একটা দাগ হতে অন্য দাগের ব্যবধান কতখানি দেখলে সেটা সহজে বুঝা যায়। পায়ের দাগের আকার দুয়েরি সমান। তবে খােকা বাঘের পায়ের ফাদ খাট, আর খুকির লম্বা। এটা নজর করে দেখা ভাল। কোনও জীবেরই শিশু হত্যা করা ভাল নয়। এদের বেঁচে বর্তে বড় হতে দেওয়া উচিত। এতে যদি তােমার হাতের শিকার ফকে অন্যের হাতে গিয়ে পড়ে, তবুও এ স্বার্থ ত্যাগ করা কর্তব্য। বাঘ ও চিত। কি করে গরু মােষ মারে এ খবরটা জানতে সবারই কোতুহল হয়। এ ব্যাপার স্বচক্ষে দেখবার সৌভাগ্য আমার ঘটোন ; তবে হত্যাকাণ্ড সমাধা হবার অব্যবহিত পরেই আমি উপস্থিত হয়েছি। হত । জন্তুটির পিঠে কিম্বা ঘাড়ের পাশেই আক্রমণকারীর দাতের দাগ দেখা যায়। আর যে ভাবে ঘাড়টি ভেঙে ঝুকে পড়ে তা দেখলে বােঝা যায় শত্রুপক্ষ নিরীহ জন্তুটির উপর ব্যাঘ্র ঝম্পনে এসে সম্মুখের পায়ের থাবা দিয়ে পরে ঘাড় মটকে ভেঙে দেয়। মারবার পরেই তাকে মুখে করে কিছু দূর চনে নিয়ে কোন ঝােপের আড়ালে কি তলায় রাখে। শকুন, হাড়গিলে কিম্বা মাংসাসী জন্তুদের মুখ হতে তাকে রক্ষা করবার জন্যেই এই কাজ করে। অনায়াসে এ ভার সে বহন করে। আমি একবার মস্তু একটা মােষকে এম্নি করে টেনে তিন ফুট চওড়া একটা নালার অঙ্ক পারে রাখতে দেখেছিলাম। এগ্নি অবলীলাক্রমে এই বিপুল ভার বয়ে নিয়ে রাখলে যে সেধারে যে মাটীর ঢিবি ছিল তাহতে এক অজিল ধুলাে ও খসে পড়লনা। পায়ের দাগ দেখে বোঝা গেল বাঘটি প্রকাণ্ড। আর অতবড় মােষটিকে, বেড়াল যেমন তার ছানা-মুখে ঝাপিয়ে পড়ে, তেমনি সহজেই ঝাপিয়ে পড়েছিল। এতে তার গায়ে কি পরিমাণ সামর্থ্য ছিল তা অনায়াসেই অনুমান করা যায়। ' এ সম্বন্ধে আমাদের দেশে সাধারণতঃ এমন অজ্ঞ যে, অনেকেই গম্ভীর ভাবে বলেন, “কাপড় চাই মেম্ সাহেব”, বলে যে ফেরিওয়ালারা সহরের অলিগলিতে ফেরে, ব্যাবীও তাদেরি মত তার শিকারের বােঝা পিঠে করে বয়ে নিয়ে যায়। আর একটা হাস্যকর ধারণা যে বাথ গিয়ে মােষ কিম্বা গরুর ল্যাজে কামড় দিয়ে ধরে ; দুটোতে খানিকটে খুব টানা হিচড়া চলে; তার পর সুযােগ বুঝে চতুর বাঘ মাষে ল্যাক্সের টানটা আলগা করে দেয় , আর সে যেয়ি মুখ থুবড়ে পড়ে, আর আমি ইনি
পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/২৪
অবয়ব