বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিলে জঙ্গলে শিকার। কোথায় আস্তানা নিয়েছে তা বােঝা যায়। এখন তার কাছাকাছি পেীছি হতে! ছের আড়ালে আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে আস্তে আস্তে এগােন ভাল। সম্ভব হলে মাঝে মাঝে দু'এ+ b খুলে গুরে যাওয়া মন নয়, কিন্তু কখনই নালা কিম্বা নদীর শুন খাল কিম্বা ঘন ঘাসে ঢাকা মাঠ দিয়ে খাওয়া উচিত নয়। ময়ুর জাতের কেন কে জানে বাঘ সম্বন্ধে ভারি একটা মোহ আছে--কি সে মায়ামন্ত্র ব্যাঘ্রবীরের জানা আছে জানিনে, কিন্তু ময়ূর এদের কাছাকাছি থাকতে পারলে দূরে যেতে চায় না। জঙ্গলবাসী শিকারীরা দেখে শুনে এই জ্ঞান লাভ করেছে, আর শিকার করবার সময় ময়ূরের এই দুর্বলতা স্বার্থসিদ্ধির উপায় করে থাকে। আমি এক বার শিকার করতে গিয়ে বনের মতে, তাঁবুতে বসে ছিলাম। এক ঝাঁক ময়ূর কাছাকাছি চরছিল। দেখলাম একজন শিকারী বাঘের মত ভােরাকটা একটা হলদেটে রংঙের পর্দা নিজের সম্মুখে আড়াল করে পরে আস্তে আস্তে এগােচ্ছে। ময়ূর স্বভাবত’ ভারি ভীক আর লাজুক। কিন্তু বাঘের মত এই ভােরাটান। পদ্মা দেখে তারা ভৰি উত্তেজিত হয়ে উঠল। পর্দা সতই এগােয় ময়ুর গুলি তই ঘূৰ্ত্তি করে , বিচিত্র কলাপ আর পাখা মেলে আনন্দে নেচে নেচে বেড়ায়। গ্রাম্য শিকারীটি ২৫ গজের মধ্যে গুলি করে একটিকে হাত করলে, কিন্তু তবুও অরে। তখনও নিরাপদ হবার জন্যে পালিয়ে গেল না। পাগলের মত কলরব করে সেই পদ্দার আগে ঘুরে বেড়াতে লাগল। ইত্যবসরে শিকারী অরে। একটাকে গুলি করে সামনের পর্দা ফেলে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করলে। এই পদ্দাকে তারবলে “বাঘিনী’ -মোহিনীশক্তির আধিক্যবশত বাধ হয় স্ত্রী লঙ্গের ব্যবহার হয়েছে। সে যাই হােক, অনেকবার এ কথা শুনেছিলাম কিন্তু চোখে না দেখা অবপি বিশ্বাস করিনি। অনন সুন্দর পাখী মারা ভারি নিষ্ঠুরতা। অমন নিষ্ঠুরতা যে অামার চোখের সম্মুখে ঘটতে দিয়েছিলাম তার একমাত্র কারণ শােনাকথার সত্য পরীক্ষা। আমি মনে মরেছিলাম তার বড়াই নিতান্তই গালগল্প কিন্তু দেখলাম অন্য রকম। সে বল্লে ময়ূর শিকার করা যে শিকারীদের ব্যবসা তাদেরই কাছে এই “বাঘিনী”র চাতুরী! সে শিখে নিয়েছে। এই শিকারীরা তীরনুকে ময়ূর শিকার করে থাকে। কোন কোন বন্য প্রদেশে যেখানে চারিদিক গুল্ম কিম্বা ঘনতৃণ সমাচ্ছন্ন, মাঝে মাঝে বালুকা স্তপ আর জলহান পাণার প্রাদুর্ভাব সেখানে শিকারী হাতী পাঠিয়ে বাঘকে তাড়িয়ে তার হত শিকারের কাছে নিয়ে যায়। বলা বাহুল্য যে যে হাতী এ বিষয়ে বিশেনরূপে শিক্ষা পেয়েছে সেই কাজে লাগে কিন্তু এমন একটি হাতী সহজে বড় একটা পাওয়া যায় না। সব সময় হাতীর উপর হাওদা দেওয়া হয় না, জিন সওয়ারীর মত বসতে হয়। পা রাখবার জন্যে দুটি জায়গা থাকে। এটা বীরাসন সন্দেহ নাই কিন্তু নিরাপদ নম্ব,; বিশেষতঃ পথে এগােবার সময় বার বার ডাল পালার বাধা অতিক্রম করতে হয়। এর উপর যদি দ্বিজেন্দ্রটি বীরেন্দ্র না হয় তাহলে সমূহ বিপদ ঘটবার সম্ভাবনা। এমন একটা বিপুলবপু অনাহূত আগন্তুককে অকস্মাৎ আসতে দেখে বাঘ ও চিতা এমি স্তঙ্কিত হয়ে যায় যে প্রথম গুলি মারবার সময় কোন বাধা দেয় না। সাম্বর হরিণও ঘন ঘাসবনের মধ্যে ঠিক এইরূপই ব্যবহার করে। আর অযােধ্যায় যেখানে বহু চিত্ৰক • হরিণের বসতি এবং স্বচ্ছন্দ আহার বিহারে প্রকাণ্ড আয়তনের (য়ে ওঠে, তাহাদেরও আমি অনেকবার। অনেকগুলিকে এই উপায়ে শিকার করেছি ।