পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার একজন রাজকর্মচারী কোনও জমিদার রাজাকে জিজ্ঞা করেছিলেন,-“রাজা, একটি সিগারেট খাৰে কি ?” আধুনিক আলােকপ্রাপ্ত এই হঠাৎ-নবাবটি বলে উঠলেন,-“আমি শুধু হাভানা ব্যবহার করে থাকি”! হাভানা সর্বোৎকৃষ্ট, সর্বাপেক্ষা অধিক দামী চুরুট। আজকালকার দিনে ম্যানিলা ( manilla) আর মিউরিয়ার (muria) প্রভেদ বুঝতে পারাই হচ্ছে সভ্যতার ও সদগুণেয় বিশিষ্ট পরিচয় ! আর বিবিধ মদ্যের জাতি, গােত্র, গাঁই, কুলচি জ্ঞান যদি থাকে, তাহলে সে ত ইংরাজী কি সংস্কৃত সাহিত্যের অভিজ্ঞতার চেয়ে সমধিক গৌরবের বিষয় ! বাক্যালাপ অধিকাংশ সময়ই অকথ্য বিষয় সম্বন্ধেই হয়ে থাকে। যদিও এরা ছুরি কাঁটায় খাবার কায়দাটা খুব ভালই শিখে নিয়েছেন তবু পাশ্চাত্য সভ্যতার যথার্থ প্রভাবের বাহিরে পড়ে থাকায় তার শিল্প সাহিত্য সম্বন্ধে অজ্ঞতা বশতঃ সর্বদা কেবলমাত্র বাহাড়ম্বর ও অস্বাস্থ্যকর কপট আবরণের মধ্যে বাস করে এরা দিন দিন অকর্মণ্য ও হীনস্বভাব হয়ে পড়ছেন। মাঝে হতে রাজোচিত মৃগয়া কৌশলের ও চর্চার সমাদর চলে যাচ্ছে। হাওদার উপরে {শকার করা কোন কোন শিকারীর অভ্যাস আছে। তারা অনেকগুলি করে গুলিভরা বন্দুক সঙ্গে নিয়ে যান। তাতে নানান ঘটনা ঘটবার বিশেষ সম্ভাবনা। আমার মনে আছে একজন অল্পবয়স্ক জমিদার এই অভ্যাসবশতঃ মারা যান। ও যখন উপরের দিকে উঠছিল বন্দুক গড়িয়ে পড়ায় গুলি বাহির হয়ে যায়। তাতেই তার মৃত্যু হয়। অভ্যাস করলে একটা বন্দুক রেখে আর একটা ভুলে নিতে যে পরিমাণ সময় লাগে ভাতেই অনায়াসে সেটিতে গুলি ভরে নিতে পারা যায়। আর যে বদুকটি সৰ্ব্বদা ব্যবহার করে করে একেবারে আপনার হয়ে গিয়েছে তার কাছে যেমন কাজ পাওয়া যায় নতুন অজানা বন্দুকের কাছে তা হবার যাে নেই। আর এক কাজ কখনো কোর না। সম্মুখে 'নান শুধু নড়ে উঠেছে বলে জন্তুটিকে যত ক্ষণ স্বচক্ষে না দেখতে পাও ততক্ষণ বন্দুক ছুড়ো না। সম্মুখে ঘাস নড়ে উঠলেও জন্তুটি হয় ৩ তাং অনেক দুরে কি পিছনে পড়ে থাকে। | হাওদা-শিকারের লাইন বাবার দুটি নিয়ম মাছে।তাৰ ম5্যে একটা হচ্ছে সুতি খেলে বার যেম নাম উঠবে সেই ভাবে সাজা, কিম্বা শকারের দলতি • অর সকলে যার নিমন্ত্রিত অতিথি —তিনি যে ভাবে দল ভাগ করে দেবেন সেই মত সাজান। এই সারি বাটা ধনুকের আকারে করা ভাল। পাশের জায়গা হচ্ছে শিকারের পক্ষে সব চেয়ে সুবিধাজনক। পতাকার সঙ্কেতে এগোতে পিছতে, লারিটা প্রশস্ত কিম্বা সঙ্কীর্ণ করে নিতে হয়। এর চেয়ে কিন্তু হাওদায় করে দু একজন শিকারীকে সম্মুখে পাঠিয়ে তাদের দিয়ে শিকার জড় করিয়ে নিলে বেশী সুবিধা হয়। কোথায় কি ভাবে এ সব হাতী সারি বেঁধে দাঁড়াবে সে বিষয় স্থির করতে বিশেষ অভিজ্ঞতার আবশ্যক। তার পরে যাতে বাঘ এসে পাশ কাটিয়ে না পালিয়ে যায় কি এই সব হাতীর উপর এসে না পড়ে, সে সম্বন্ধে সতর্ক হবার জন্যে সাহস এবং চাতুরী দুইই কাজে লাগান দরকার। অনেক সময় এমনও হয় যে বাৰ গুড়ি মেরে বসে থাকার দরুণ, অন্ততঃ সেই সময়ের জন্ঠে, চোখে পড়ে না। সব সময়েই যে নির্বিঘ্নে কাৰ্য উদ্ধার হয় তা নয় ; কেননা বাঘ যেয়ি এই হাওরী হাতীটিকে দেখে আর অশ্নি চার পা তুলে লাফিয়ে , ছুটে মাসে। | ঘাসের মধ্যে দিয়ে বাঘ যখন আক্রমণ করবার জন্যে ছুটে আসে সে বড় চমৎকার দৃশ্য ! দেবতারা দেখলেও খুসা হয়ে যান। এ স্থ। শুধু হাতীটি নির্বিকার হলে চলে না—শিকারীর গুলিটিও t