পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার। ২৭ - ১লা অক্টোবর ১৯১৭। মেহের অলক কল্যাণ, | আহত হিংস্র জন্তুকে—যেমন বায ভল্লুক কিম্বা চি তাকে অনুসরণ করা বিপদসঙ্কুল। এ কাজ নিৰ্বিয়ে সমাধা করতে হলে, আপনাকে এবং অনুচরবর্গকে রক্ষা করতে হলে, সাবধানতা ও বহুকাল অর্জত অভিজ্ঞতার বিশেষ আবশ্যক। অনুচরবর্গকে রক্ষা করার দিকে ই অধিকতর মনোেযােগ দিতে হয়। কেননা তারা আত্মরক্ষার যােগ্য অস্ত্র ধারণ করে না, এমন কি অনেক সময় কোন অস্ত্রই তাদের থাকে না। সৰ্ব্বতােভাবে তার আত্মজীবন রক্ষার জন্যে তােমারই উপর নির্ভর করে। শিকার ব্যাপারে দৈবাৎ কিছু ঘটে না। যদি কোন বিপদ হয় তবে নিশ্চয় জেনাে সেটা অজ্ঞতা,নিৰ্বদ্ধি ও দুঃসাহসিকতার পরিণাম। এত দিন ধরে আমার চিঠি পড়ে তােমরা এটুকু জেনেছ বােধ হয়, দুরন্ত হিংস্র জন্তু শিকার করতে হলে, কেমন জায়গায় দাঁড়িয়ে এ কাজ করতে হবে, সে স্থানটা বিশেষ বুদ্ধি বিবেচনার সহিত স্থির করা প্রথম এবং প্রধান কাজ। আর সব দিকেই দৃষ্টি রেখে গুলি করবে,অনর্থক বিপদ ডেকে আনে না। বন্দুক আওয়াজ করবার পর আর কোন শিকারী যাতে কিছু মাত্র শব্দ না করে, সে বিষয়ে কড়া হুকুম দেবে। তার যাতে এ আদেশের কোনরূপ ব্যতিক্রম না হয় সে সৎ ও মনােযােগী হবে। আজ পৰ্য্যন্ত আমি এই নিয়মে চলেছি আর স মৃগয়া ক্ষেত্রে আমার একছত্র অধিকার সেখানে কখনই এই নিয়ম ভঙ্গ হতে দিই নি। ত: পর আমার বা *র সঙ্কেতে তারা জানতে পারে শিকার ফসকেছে, ঘায়েল হয়েছে কিম্বা ঘায়েল হবার পরে পালিয়ে গিয়েছে। চার কি নিঃশব্দ থাকলে আহত জন্তু অধিক দূরে যায় না, নিকটে আড়াল আবডাল দেখে লুকিয়ে বসে থাকে। কিন্তু সােরগােল যদি চলে তবে প্রাণপণ শক্তিতে যতদুর সাপ্য তত অধিক দূরে যায়। খুব সম্ভব সে দৃষ্টির মধ্যে কাছেই থাকে, কিন্তু সেখানে শেষ গুলি মারবার সুবিধা হয় না। তাই জন্ঠে নড়াচড়া, কথা কওয়', তোমার কৃতকাৰ্য্যতা অথবা তোমার জীবনের পক্ষে হানিকর হতে পারে। যদি তােমার বন্দুকবাহক অপর এক ব্যাক্তকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে তাকে এমনি শেখাবে যে লে নেন, টু শব্দটা না করে। এ সমন্ধে তোমাদের একটা দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি। আমি একবার স্ত একটা চিত। বাঘকে ঘন বনের মধ্য হতে লাফিয়ে বেরিয়ে আসবামাত্রই গুলি করেছিলাম। সৌভাগ্যবশতঃ আমা হতে দু’চার পা দুরে আমার দিকে পিঠ করে সে পড়ে গিয়েছিল। কাছেই গুটি কত বাবুলগাছ। চারি দিকের ঘাস এক ফুটের বেশী উচু নয়। হাত চামশেকের মধ্যে তার লুকিয়ে আশ্রয় নেবার দ্বিতীয় স্থান হিণ না। আমার আর তার মধ্যে কোন ব্যবধান ছিল না। অনায়াসেই সে আমাকে আক্রমণ করতে পারত। তার মূর্তি আর ভঙ্গী দেখে তার মনােভাবও যে তাহ, সে কথা বােঝা যাচ্ছিল। সমস্ত শরীরটা টান করে রেখেছিল। ঘড়ের রােম সব উচু হয়ে উঠেছে, কাণ দুটি খাড়', লেজটা শুধু ঈষৎ নড়ছিল। আমি দেখলাম এক গুলির চেয়ে, দুই গুই বেশ কাজের হবে। সমস্ত ক্ষণ বাঘের দিকে দৃষ্টি রেখে আমি বন্দুকের ডান দিকের নলে গুলি ভরছি! (ভেবোনা কাটি বড় সােজা!) এমন সময় দলের এক জন শিকার। গাছের উপর হ’তে হঠাৎ <লে উঠল,-“ওৰে উঠছে গুলি কর, গুলি কর।” খুব সম্ভব আমার চেয়ে খাধের দুরভিসন্ধি সে ভাল করে ধুধতে পেরেছিল। এমন অবস্থায় যে কখনাে পড়েছে সেই জানে কি ভয়ানক আক্রোশের সঙ্গে বাট। উঠে আমার দিকে ফিরে দাড়াল। আমি বন্দুক নামিয়ে গুলি করে যখন দেখলাম সে আবার ধরাশায়ী হয়েছে খকি শাস্তিই বােব .