পাতা:টম ব্রাউনের স্কুলজীবন - রাসবিহারী মুখোপাধ্যায়.pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৮ টম ব্রাউনের স্কুলজীবন। এইটা চিলা সময় থাকায় এবং তাহার রুচিকরা কোন খেলা ধূলাও চলিতে না থাকায়, সে এই সময়টা এমন সুখে কাটাইয়াছিল যে ইস্কুলে আসিয়া পর্যন্ত আর কখনও সে রকম কাটায় নাই। এবং সেটা বড় কম কথা হইল না। ৯ টম কেবল একটি সময় তাহার হেফাজতের পাত্রটিকে ত্যাগ করিয়া একটু অবকাশ লইত, সেটি তালা-বন্ধ হইতে রাত্রিভােজনের সময় পর্যন্ত। এই একঘণ্টা কি দেড়ঘণ্টা সময়টাতে আলাপীদের পড়ার ঘরে চকর দিয়া, হলঘরে বসিয়া উত্তর কাটাকাটি অথবা গল্প গুজব করিয়া, অথবা লােহা-বধান টেবিলের উপরদিয়া লাফ খাইয়া, না হয়ত উহার গায়ে নিজের একটু নাম খুদিয়া, আর তারপর হয়ত সহর্ষকণ্ঠের কোন সমবেত সঙ্গীতে যােগদিয়া গায়ে হাওয়া লাগাইয়া আসিত । এক কথায় যাকে আমরা ভাপ ছাড়া বলি আর কি! এইরূপ আচরণ তাহার প্রকৃতির এত অনুকূল ছিল, এবং আর্থার ও এই ব্যবস্থায় এত সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছিল, যে টম সায়াহুভােজনের আগে পড়ার ঘরে কখন আসিবার পূর্বে এমন কয়েক সপ্তাহই কাটিয়া গিয়াছিল। এক দিন সন্ধ্যার পর একটা পুরাণ বাটালি, অথবা কয়েকটি ছিপি, অথবা তাহার তাৎকালিক ধান্দার উপযােগী অমনই একটা কিছুর সন্ধানে ছুটিয়া ঘরের মধ্যে ঢুকিয়া দেরাজ হাতড়াইতে হাতড়াইতে আর্থার বেচারীর দিকে নজর পড়ায় তাহার আকৃতি দেখিয়া সে স্থির হইয়া দাঁড়াইল। বালক টেবিলের উপর কনুই রাখিয়া, হাতে মাথা দিয়া বসিয়াছিল, সমুথে একখানি বহি থােলা, তাহার উপর টস টস করিয়া চোখের জল পড়িতেছে। টম তৎক্ষণাৎ দরজা ভেজাইয়া, সোফার উপর আর্থারের পাশে বসিয়া, তাহার গলা জড়াইয়া ধরিল।