অমনি চটাস করে রাখালের লাঠি তার হাতে আটকে গেল। সে কত হাত ঝাড়লে, কিছুতেই তাকে ফেলতে পারলে না। যখন গরু নিয়ে সে রাজার বাড়িতে ফিরে এসেছে, তখনো সে হাত ঝাড়ছে।
রাজার বাড়ির দাসী ভাঙা কুলোয় করে ছাই ফেলতে যাচ্ছিল। সে রাখালকে দেখে বললে, ‘দূর হতভাগা! অমনি করে হাত ঝাড়ছিস কেন? কি হয়েছে তোর হাতে?’
রাখাল বললে, ‘সে কথা যদি বলি, তবে কিন্তু আর ঐ কুলোখানা তোমার হাত থেকে নামাতে পারবে না, সেখানা তোমার হাতেই আটকে থাকবে।’
দাসী বললে, ‘ঈস! আচ্ছা থাকে থাকবে, তুই বল।’ তখন রাখাল বললে—
উকুনে-বুড়ী পুড়ে মোলো,
বক সাতদিন উপোস রইল,
নদীর জল ফেলিয়ে গেল,
হাতির লেজ খসে পড়ল,
গাছের পাতা ঝরে পড়ল,
ঘুঘুর চোখ কানা হল,
রাখালের হাতে লাঠি আটকাল।
অমনি দাসী ‘ওমা! এ কি গো! কি হবে গো!’ বলে কাঁদতে লাগল। সে অনেক করে ও কুলো হাত থেকে নামাতে পারলে না।
শেষে রাখাল-ছোকরাকে গাল দিতে দিতে ঘরে গেল।
ঘরে গিয়ে দাসী হাত থেকে আর কুলো নামাচ্ছে না। রানী তখন থালা হাতে করে রাজার জন্যে ভাত বাড়ছিলেন। দাসীকে দেখে তিনি হেসে বললেন, ‘দাসী তোর হয়েছে কি? কুলোটা হাত থেকে নামাচ্ছিসনে কেন?’
দাসী বললে, ‘তা যদি বলি রানীমা, তবে কিন্তু ঐ থালাখানা আর আপনার হাত থেকে নামাতে পারবেন না, ওখানা আপনার হাতে আটকে যাবে।’
রানী বললেন, ‘বটে! আচ্ছা বল দেখি কেমন আটকায়।’
তখন দাসী বললে—
উকুনে-বুড়ী পুড়ে মোলো,
বক সাতদিন উপোস রইল,
নদীর জল ফেনিয়ে গেল,
হাতির লেজ খসে পডল,
গাছের পাতা ঝরে পড়ল,