ভাবিলাম। মনে মনে একটু আক্ষেপ হইল, অনুশােচনা আসিয়াও উপস্থিত হইল। ভাবিতে ভাবিতে গােলাপের বাটীতে গেলাম। গােলাপ আমার মনের ভাব বুঝিল—আমাকে সুস্থ করিবার চেষ্টা করিল। এক গ্লাস সুরা আনিয়া আমার সম্মুখে ধরিল, আমি পান করিলাম, সকল দুঃখ ও ভাবনা ভুলিলাম। আমার তীক্ষ্ণ বুদ্ধির প্রভাবে পরিশেষে পাস হইবার একটা অতি সহজ উপায়ও বাহির করিয়া রাখিলাম।
স্কুলের সকলে পরীক্ষা দিল। পরীক্ষার ফল বাহির হইল। আমি সেই সময়ে যে উপায় ভাবিয়া রাখিয়াছিলাম, সেই উপায় অবলম্বন করিয়া দুষ্কর্ম্মের অন্য আর এক সােপানে পদার্পণ করিলাম। পিতাকে বলিলাম, “আমি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হইয়াছি।” তিনি আমার কথায় বিশ্বাস করিলেন, মনে মনে সন্তুষ্ট হইলেন। সেই সময় পিতা আমার বিবাহের বন্দোবস্ত করিলেন,—আমিও শুনিলাম, আমার বিবাহ হইবে। শুনিয়াছি, বিবাহের কথা শুনিলে সকলে আহ্লাদিত হন, কিন্তু আমার মনে যে কি ভয়ানক দুঃখ আসিয়া উপস্থিত হইল, তাহা আমিই জানিলাম—আর যদি কেহ আমার মত অবস্থায় কখন পড়িয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনিও বুঝিবেন। কিন্তু কি করি, কিছুই করিতে পারিলাম না; আমার অনভিমতেই বিবাহ হইয়া গেল। প্রতিবেশী গণের নিকট শুনিলাম যে, আমার স্ত্রী পরমা সুন্দরী; কিন্তু গােলাপ অপেক্ষা তাহাকে সুন্দরী বলিয়া আমি বিশ্বাস করিতে পারিলাম না।
এক বৎসর হইল, গােলাপের সহিত আমার আলাপ