পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
ডিটেক্‌টিভ পুলিস, ১ম কাণ্ড।

কাগজ পত্র সহিত ধরিয়া কলেজের প্রধান কর্ত্তার নিকট লইয়া গেলেন। আমি তাঁহার মেজাজ জানিতাম, তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করায় আমি তাঁহার নিকট এই ঘটনার সমস্ত ব্যাপার স্বীকার করিলাম এবং তাঁহাকে সঙ্গে করিয়া আনিয়া গোলাপের বাটী হইতে পুস্তক দুইখানি বাহির করিয়া দিয়া তাঁহার নিকট ক্ষমাপ্রার্থনা করিলাম। উক্ত সাহেব মহোদয় অতিশয় দয়ালু ছিলেন। তিনি আমাকে পুলিসের হস্তে অর্পণ না করিয়া কেবলমাত্র কলেজ হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দিলেন। আমি সে যাত্রা দণ্ডবিধি আইনের কঠিন দণ্ড হইতে পরিত্রাণ পাইলাম।

 পুস্তকাগারের অধ্যক্ষ প্রভৃতি যাহারা দুই দিবসের নিমিত্ত বিশেষরূপ লাঞ্ছনাভোগ করিয়াছিল, তাহারা এ সুযোগ পরিত্যাগ করিল না; আমার বিপক্ষে অনুসন্ধান করিয়া সমস্ত দোষ বাহির করিল ও আমার পিতাকে বলিয়া দিল।

 বৃদ্ধ পিতা মর্ম্মান্তিক দুঃখিত হইয়া আমাকে কেবলমাত্র এই বলিলেন, “আমি তোমাকে যে প্রকার বিশ্বাস করিতাম, তাহার উপযুক্ত ফলই পাইয়াছি। কিন্তু ইহাও তুমি নিশ্চয় মনে রাখিও, ইহজীবনে তুমি কখনও সুখী হইতে সমর্থ হইবে না।” পিতা সেই দিবস হইতে আর আমার সহিত ব্যাক্যালাপ পর্য্যন্ত করিলেন না। আমি পূর্ব্বে দিবাভাগে ও সন্ধ্যার সময় গোলাপের বাটীতে যাইতাম; কিন্তু এখন আমার আরও সুযোগ বাড়িল, রাত্রিদিন তাহার বাটীতেই থাকিতে লাগিলাম। কিন্তু এখন আর এক পয়সাও দিয়া তাহার সাহায্য করিতে পারিলাম না।