পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডাক্তার বাবু।
৩১

 গোলাপের উপর আমার মন এত আকৃষ্ট হইয়াছে যে, তাহাকে তিলার্দ্ধ দেখিতে না পাইলে চতুর্দ্দিক অন্ধকার দেখি। গোলাপও তাহা বুঝিল। সে এত দিবস হইতে যে মায়াজাল বিস্তার করিয়া আমাকে প্রলোভিত করিতেছিল, এখন যে তাহার ফল ফলিয়াছে, তাহা সে বুঝিতে পারিল। সে এখন জানিল যে, তাহাকে ছাড়িয়া আর আমি মুহূর্ত্তও থাকিতে পারিব না। তখন সে নিজের স্বভাব ক্রমে ক্রমে প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিল। “খরচের টাকা নাই” “একটীমাত্র পয়সা নাই,” “হরি বাবু তারাকে যেরূপ একটী হীরার আংটি দিয়াছে, আমি সেইরূপ একটী আংটি লইব”, “কামিনীর মতন বারাণসী শাটী একখানিও আমার নাই”, “বসন্ত তাহার কাশ্মিরী শাল যোড়াটী বিক্রয় করিবে, উহা আমাকে খরিদ করিয়া দেও”, প্রভৃতি একটী একটী নূতন কথা নিত্য নিত্য আমার কাণে তুলিতে লাগিল। আমিও যাহাতে তাহার এই সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিতে পারি, তাহার উপায় মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলাম। একদিবস সে আমার উপর অতিশয় বিরক্তি-ভাব দেখাইয়া বলিল, “ডাক্তার! যদি তুমি কল্য আমাকে এক সেট সোণার গহনা আনিয়া দেও, ভালই, নচেৎ তুমি আমার বাটীতে আসিও না।” এই কথায় আমার অতিশয় ক্রোধ ও দুঃখ হইল। তাহাকে বলিলাম, “যদি আমি তোমার নিমিত্ত সোণার গহনা আনিতে পারি ভালই, নচেৎ তোমার বাটীতে আর আসিব না।” এই বলিয়া ক্রোধভরে গোলাপের বাটী হইতে বহির্গত হইলাম। গোলাপ পশ্চাৎ হইতে বার বার ডাকিল, আমি শুনিয়াও শুনিলামনা, চলিয়া