পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
ডিটেক্‌টিভ পুলিস, ১ম কাণ্ড।

শুইয়া শুইয়া তাহাদিগের অবস্থা দেখিতে লাগিলাম। ইহারা সকলে সুরাপান করিতে করিতে এক এক করিয়া ক্রমে সকলেই হত-চেতন হইয়া পড়িলেন। আমি যখন দেখিলাম আর কাহারও সংজ্ঞা মাত্র নাই, তখন আমি উঠিয়া আস্তে আস্তে স্ত্রীলোক আটটীর শরীরে যতগুলি অলঙ্কার ছিল, তাহার সমস্ত গুলিই খুলিয়া লইয়া, আমার ডিস্পেন্সারীর পশ্চাদ্‌ভাগে একস্থানে মাটীর ভিতর পুঁতিয়া রাখিলাম, এবং যাহাতে আমারও অতিশয় নেসা হয়, সেই প্রকার সুরাপান করিয়া রহিলাম। পরদিন সকলের শেষে আমার নেসা ছুটিল; উঠিয়া দেখি সকলেই হাহাকার করিতেছেন। আমি তাঁহাদিগের অবস্থা দৃষ্টি করিয়া অতিশয় দুঃখ প্রকাশ করিতে লাগিলাম। স্ত্রীলোক কয়টী থানায় গিয়া নালিস করিতে চাহিল; কিন্তু বাবুগণ তাহাদিগকে নিবারণ করিয়া বলিলেন, “তোমাদিগের গহনা যে আমাদের দোষে চোরে চুরি করিয়া লইয়া গিয়াছে, তাহার আর কিছুমাত্র ভুল নাই; কিন্তু নালিস করিলেই যে গহনাগুলি পাওয়া যাইবে, তাহারই বা সম্ভাবনা কি? লাভের মধ্যে আমাদের এই অকার্য্য প্রকাশ হইয়া পড়িবে। ঐ সকল গহনা আমরাই দিয়াছিলাম, গিয়াছে, না হয় পুনরায় প্রস্তুত করিয়া দিব।” এই বলিয়া তাহাদিগকে নিবৃত্ত করিয়া সকলেই কলিকাতায় চলিয়া আসিলেন। আমি সেই স্থানে থাকিলাম। কিছুদিবস পরে ঐ সকল অলঙ্কার ক্রমে ক্রমে বাহির করিয়া বিক্রয় করিলাম। তাহাতে প্রায় ৮০০০৲ টাকা সংগ্রহ হইল; কিন্তু এক বৎসরের মধ্যেই সুরাপান প্রভৃতি দুষ্কর্ম্মে উহা নিঃশেষ হইয়া গেল।