আমাকে সমভিব্যাহারে লইয়া তাঁহার আফিস ঘরের ভিতর প্রবেশ করিলেন। কাগজ কলম প্রভৃতি সমস্তই সেইস্থানে প্রস্তুত ছিল, আমাকে আর কোন কথা জিজ্ঞাসা না করিয়া একখানি নিদর্শন পত্র লিখিয়া আমার হস্তে প্রদান করিলেন। উহার মর্ম্ম এইরূপ—“ডাক্তার বাবুর ভ্রাতার চিকিৎসা আমি নিজে করিয়াছি। উহার বিসূচিকারোগ হইয়াছিল, ও সেই রোগেই উহার মৃত্যু হইয়াছে। আমি জোর করিয়া বলিতে পারি, উহার মৃত্যু সম্বন্ধে পুলিসের সন্দেহ করিবার কোন কারণই নাই।”
এই নিদর্শন পত্র সমভিব্যাহারে দ্রুতগতি আমি কাশীমিত্রের ঘাটে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম, পুলিসকর্ম্মচারী সেই মৃতদেহের নিকট বসিয়া রহিয়াছেন। সেই পত্র তাঁহার হস্তে অর্পণ করিলাম। একবার দুইবার করিয়া কয়েকবার মনে মনে তিনি এই পত্রপাঠ করিলেন, ও নিতান্ত ভগ্নহৃদয়ে পরিশেষে কহিলেন, “কলিকাতার সর্ব্বপ্রধান ইংরাজ ডাক্তার যখন বলিতেছেন—এই মৃত্যুতে কোনরূপ সন্দেহ নাই, তখন কি প্রকারে আমি এই শব পরীক্ষার নিমিত্ত ডেড্হাউসে পাঠাইয়া দিই, আমি এই পত্র আপনার নিকট রাখিলাম। আপনারা মৃতদেহের সৎকার কার্য্য সমাপন করিতে পারেন।” এই বলিয়া পুলিস-কর্ম্মচারী উক্ত পত্র হস্তে লইয়া, আস্তে আস্তে সেইস্থান পরিত্যাগ করিলেন। সৎকারের সমস্ত দ্রব্যই প্রস্তুত ছিল; দেখিতে দেখিতে চিতা প্রজ্জ্বলিত হইল, আমার ভ্রাতার মৃতদেহ ভস্মে পরিণত হইয়া গেল। আমার মনে যে ভয়ের কারণ