পাতা:ডিটেক্‌টিভ পুলিস (প্রথম কাণ্ড) - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লেখকের বক্তব্য।
৮৫

কঠিন দণ্ড হইতে অব্যাহতি পাইয়াছেন, তাহা কিন্তু তাঁহার পিতা বলিতে পারিলেন না, বা ইচ্ছা করিয়াই বলিলেন না। ডাক্তার বাবু সেই সময়ে বাড়ীতে ছিলেন না, সুতরাং তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ হইল না, আমি নিজ স্থানে প্রত্যাবর্ত্তন করিলাম।

 গুরুতর অপরাধে যাঁহার কেবল ছয় বৎসরমাত্র কারাদণ্ড হইয়াছে, এক বৎসর গত হইতে না হইতেই তিনি কি প্রকারে জেল হইতে বহির্গত হইলেন, এই বিষয় অবগত হইবার নিমিত্ত আমার মনে নিতান্ত কৌতুহল জন্মিল। উহার প্রকৃত তত্ত্ব কি, জানিবার নিমিত্ত পরদিবসই আমি ‘হরিণবাড়ী জেলে’ গমন করিয়া আমার মনোগত ভাব সেই স্থানের প্রধান কর্ম্মচারীর নিকট প্রকাশ করিলাম। তিনি ডাক্তার বাবু সম্বন্ধে কাগজ-পত্র দেখিয়া আমাকে কহিলেন, “কঠিন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইয়া ডাক্তার বাবু জেলে আগমন করিবার কয়েক মাস পর পর্য্যন্ত তিনি জেলের নিয়মানুযায়ী কর্ম্মকার্য্য প্রভৃতি সমস্তই সুচারুরূপে সম্পন্ন করিয়া আসিতেছিলেন। ইহার পরেই তাঁহার মস্তিষ্ক ক্রমে বিকৃতাবস্থা প্রাপ্ত হইতে আরম্ভ হইয়াছিল। প্রথম প্রথম ক্রমে তাঁহাকে অন্যমনস্ক বোধ হইত, পরিশেষে তিনি মৌনভাবে চুপ করিয়া বসিয়া থাকিতেন। ক্রমে থাকিয়া থাকিয়া তাঁহার মুখে ‘টাকা’ শব্দ বাহির হইতে লাগিল; পরে সর্ব্বদাই তিনি ‘টাকা টাকা’ শব্দে জেলের ভিতর চীৎকার করিতে আরম্ভ করিলেন। শয়নে ‘টাকা’ স্বপনে ‘টাকা’ আহারের সময় ‘টাকা’ বিশ্রামের সময় ‘টাকা’, বস্তুতঃ