এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তত্ত্ববিচার।
৭
সুশীতল হইবে। আমি নিজে চাহিয়া লইলে আর কয়টী অভাব পূর্ণ হইবে? কেননা আমি যে নিজের কি কি চাই তাহাই জানি না। ভগবান ভাল বুঝিয়া যাহা আমাদের মঙ্গলের সমস্তই দিবেন; জ্ঞান, ভক্তি, বিবেক, বৈরাগ্য প্রভৃতি যাহা কিছু আমাদিগকে তাঁহার চরণ সেবার উপযোগী করিবার জন্য দরকার, সে সমস্তেই তিনি আমাদিগকে শোভিত করিবেন। আমরা কেবল নিজে নিজে তাঁহার শরণাগত হইতে পারিলেই কৃতকৃতার্থ হইয়া যাইব, কামক্রোধাদি[১] কোন দোষের দিকেই তাকাইয়া আমাদিগকে ভীত বা পশ্চাৎপদ হইতে হইবে না। আমরা একটী একটী করিয়া কয়টা দোষেরই বা সংশোধন করিতে পারিব; কিন্তু একরার তাঁহার অলোক-সামান্য রূপ দেখিলে, ইতর সমস্তই কূৎসিত দেখাইবে, তাহাতে আর মন মজিবে না।
ভগবানের কৃপাদৃষ্টি হইবামাত্রই আমাদের জ্ঞাত ও অজ্ঞাত সমস্ত পাপেরই অবসান হইয়া যাইবে। গঙ্গাজলে নামিলেই ময়লামাটী
- ↑ লোকে কামাদিকে রিপু বলিয়া বর্ণন করে, অথচ কার্য্যকালে তাহাদিগের সহিত পরম মিত্রের ন্যায় ব্যবহার করিয়া থাকে। ব্রহ্মাদি জয়-সংরূঢ় কামের প্রতি শত্রুর ন্যায় ব্যবহার করিলে, একবার অশ্রদ্ধা করিলে আর কি কাম আসিয়া থাকে? কিন্তু কামের আগমন কালে লোক সকল বিচিত্র বেশভূষায় শোভিত হইয়া তাহার অভ্যর্থনা করিয়া থাকে; সুতরাং কাম আসিবে না কেন? আর মনুষ্যের কি সামর্থ্য যে কন্দর্পের ন্যায় প্রতাপী পুরুষকে পরাভূত করে? সুতরাং দীনহীন কাঙ্গালের ন্যায় রিপুদলের দর্শনে ভীত চকিত হইয়া ভগবানের চরণপ্রান্তে ছুটিয়া যাও; তাঁহার আশ্রয়ে কেহই আক্রমণ করিতে পারিবে না, সে শক্তিতে সকলেই পরাভূত হইবে। জলে অবগাহন করিলেই সমস্ত উত্তাপ একেবারে শীতল হইয়া যাইবে।