পাতা:তত্ত্ববিচার.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তত্ত্ববিচার।

প্রকৃত তত্ত্ব জানিতে হইলে আমাদিগকে সর্ব্বপ্রথমে প্রকৃতি ও প্রবৃত্তির পার্থক্য এবং তজ্জনিত বৃত্তি প্রবাহের বিভিন্নতার বিষয় একটু আলোচনা করিতে হইবে।

 প্রবৃত্তি প্রকৃতি হইতে উদ্ভূত হইলেও তোয় তরঙ্গের ন্যায় উভয়ের পার্থক্য অনুভূত হইয়া থাকে। জীবের প্রকৃতি প্রবৃত্তির হিল্লোলে স্ফুরিত হইবার অতি অল্পই অবকাশ পায়; সুতরাং আমরা অধিকাংশ সময়েই প্রবৃত্তির অনুবর্ত্তী হইয়া কার্য্য করিয়া থাকি। অথচ প্রকৃতির অনুরূপ কার্য্য না করিলে কোন উপকারেরই আশা নাই। এই জন্ম আমরা প্রকৃতির তথ্য না লইয়া নিজ নিজ প্রবৃত্তির আদেশ অনুসারে যাহা তাহা করিয়া থাকি। যাহা ভাল লাগে তাহাই আবশ্যক ও উপযোগী বোধ হয়, এবং তাহাতে আপাততঃ লোকের নিকট বাহাবা পাইলেও কিন্তু সাধকের বস্তুতঃ তাহাতে কোন ফলই সিদ্ধ হয় না। ধর্ম্মক্ষেত্রের প্রভাবে অর্জ্জুনের ক্ষণিক বৈরাগ্য উদয় হইয়াছিল বটে; কিন্তু তাহা যে অস্থায়ী ইহা অৰ্জ্জুন স্বয়ং না বুঝিলেও, অন্তর্যামী ভগবান্ তাহা বিশেষ বুঝিয়াছিলেন। তাই অর্জ্জুনকে তাঁহার ক্ষাত্র প্রকৃতির অনুরূপ কার্য্য করিবার জন্য তিনি বারম্বার উপদেশ করিয়াছিলেন, এবং অৰ্জ্জুনও যে প্রথমে আপনার প্রকৃতিগত সামর্থ্য বুঝিতে পারেন নাই, ভগবান কর্তৃক প্রবুদ্ধ হইয়া তাঁহার পুনরায় যুদ্ধোদ্যমেই তাহা স্পষ্ট জানা যাইতেছে। আমরা অনেক সময় সদুপদেশের অনুসরণ না করিয়া প্রবৃত্তিপরিচালিত হই বলিয়া পরিণামবিরস ফলই উৎপন্ন হইয়া থাকে।

 যাহার যাহা ভাল লাগে না, অন্যের পক্ষে কঠিন হইলেও তাহার পক্ষে তাহা ত্যাগ করা কিছুই শক্ত নয়: সুতরাং যাহার গৃহপরিজনে আস্থা নাই, তাহার সংসারত্যাগে ক্লেশ কোথায়? যাহারা সংসারী