পাতা:তত্ত্ববিচার.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তত্ত্ববিচার।

বটে। কিন্তু কার্যাসিদ্ধি হইবার আরও একটা অতি সহজ উপায় আছে; তাহাতে সাধক প্রথমতঃ কিছুই বুঝিতে পারিবেন না, অথচ অবশেষে দেখিবেন, অনায়াসেই তাঁহার অতি কৃচ্ছসাধ্য কার্যা সিদ্ধ হইয়া গিয়াছে। সে সহজ উপায় কি? জীবমাণেরই অনুরাগ-বুদ্ধি আছে; আমরা কিছু না কিছু ভাল না বাসিয়া থাকিতেই পারি না। সুতরাং যদি ভালবাসিতেই হইল, তবে এমন কাহাকেও ভালবাসি, যাহাতে ভোগ ও ত্যাগ উভয়েই অনাসক্তি জন্মাইয়া যায়; ইহাই সহজ সাধন। যাঁহার অপেক্ষা আর কিছু সুন্দর পদার্থ জগতে নাই, মন একবার তাঁহার ভাবে মঞ্জিলে জগতের আর কোন পদার্থ ই তাঁহাকে আকর্ষণ করিতে পারিবে না। যে একবার সন্দেশের স্বাদ পাইয়াছে, তাহার কি আর গুড় ভাল লাগে? অনুরাগ আসক্তির ভিতর দিয়া ভগবানে ভালবাসা জন্মিলে, বিনা চেষ্টাতেই বিষয় ও বৈরাগ্যে বিরক্তি আসিয়া যায়, কিছুই যত্ন করিতে হয় না; তাই ভগবানের শরণাগত হইয়া সাধন বড় সহজ। দুর্ব্বল জীব আমরা, আমাদের কোনই শক্তি সামর্থ্য নাই; এইটুকু মনে হইলেই ভগবানের শরণাগত হওয়া আমাদের পক্ষে অতি সহজ। আর যত গোল আমাদের নিজের বলবুদ্ধির দ্বারা বিষয় হইতে অব্যাহতি পাইবার ইচ্ছা! যিনি বাঁধিয়াছেন, তাঁহার শরণাগত না হইয়া নিজের চেষ্টায় বন্ধনমুক্ত হইতে গেলেই গোল বাধিয়া যায়, বন্ধন না খুলিয়া বরং আরও কসিয়া আঁটিয়া যায়, পদে পদে ভ্রান্তি বশতঃ পতিত হইতে হয়। এই জন্যই ভগবান বলিতেছেন—

দৈবী হোষা গুণময়ী মম সায়া দুরত্যয়া।
মামেব যে প্রপদ্যন্তে মায়ামেডাং তরন্তি তে॥

 অনুরাগের ভিতর ভগবদ্ভাব মিশিলেই বিষয়াসক্তি মন হইতে আপনি বাহির হইয়া যায়। স্বামীজী দৃষ্টান্তস্থলে বলেন— গুপ্তপাড়ার