পাতা:তরুণের আহ্বান - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইতে হইবে। যত সামান্যই হউক না কেন, তোমাদের কিছু পরিমাণে আত্মত্যাগ করিতে হইবে। সেক্ষেত্রে আগামী দিনগুলিতে নিপীড়ন ও নির্যাতনের জন্য প্রস্তুত থাকো। আগামীকাল তোমাদের উপর যে কঠিন দাবি আসিবে তাহার মুখোমুখি দাঁড়াইবার জন্য শরীর ও মনে শক্তি সঞ্চয় করো। তোমাদের সকল প্রকার পাঠগ্রহণ এই আদর্শের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া নিশ্চিত করিতে হইবে।

 জীবনের যে চিত্র আমি এখানে তোমাদের নিকট উন্মোচিত করিয়াছি তাহাতে অন্তহীন দুঃখ নিপীড়ন নিহিত রহিয়াছে। তাহা অস্বীকার করিবার নয়। আমাকে বিশ্বাস করো তাহার ক্ষয়-ক্ষতি পূরণের জন্যে প্রচুর আনন্দও ইহাতে নিহিত রহিয়াছে। তোমাদের জন্য যে পথরেখা অনাবৃত করিয়াছি তাহা নিঃসংশয়ে কঠিন, কণ্টকাকীর্ণ। কিন্তু এই পথরেখাই কি গৌরবের একমাত্র পথ নহে? স্বাধীনতার এই তীর্থ-পরিক্রমায় ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত ধরিয়া অভিযানে যোগ দিবার জন্য তোমাদের আমন্ত্রণ জানাইতেছি। মানবজীবনে এইভাবে আমরা সর্বোত্তম পুরস্কার লাভ করিব। যদি আকাশ ব্যর্থতা ও নিপীড়নে অন্ধকারাচ্ছন্ন হইয়া যায়, দুঃখ ও বেদনাবোধ প্রতিপদে প্রতিহত করে, তথাপি অন্তিম লক্ষ্যে পৌঁছিয়া বিধাতার বিধানে অপার আনন্দ এবং শাশ্বত জীবনের অধিকার আমরা লাভ করিবই।

‘বন্দেমাতরম’।

 ডিসেম্বর ১৯২৯