পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
তরুণের স্বপ্ন

তুমুল ঝগড়া হইত, দেশবন্ধু আলোচনার সময় কখনও কখনও ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিতেন বটে, কিন্তু স্পষ্টবাদীর উপর তিনি কোনও দিন মনে বিরক্ত হইতেন না। এমন কি, অনেকের ধারণা ছিল যে, যাহারা বেশী আপত্তি তুলিত তাহাদের কথা তিনি বেশী শুনিতেন। অবশ্য এ কথা সত্য যে, মতভেদ হইলেও তাঁহার অনুচরেরা অসংযত বা উচ্ছৃঙ্খল হইত না অথবা নেতার উপর আক্রোশবশতঃ প্রকাশ্যে গালাগালি করিয়া শত্রুপক্ষে যোগদান করিত না। দেশবন্ধুর সঙ্ঘের প্রধান নিয়ম ছিল সংযম ও শৃঙ্খলা। পরস্পরের মধ্যে মতানৈক্য ঘটিতে পারে কিন্তু ভোটের দ্বারা একবার কর্ত্তব্য স্থির হইয়া গেলে সেই পন্থা অবলম্বন করিতেই হইবে। সঙ্ঘের নিয়মানুবর্ত্তী হওয়ার শিক্ষা এই পবিত্র ভারতভূমিতে নূতন নয়। ২৫০০ বৎসর পূর্ব্বে ভগবান বুদ্ধ সর্ব্বপ্রথমে ভারতবাসীকে এই শিক্ষা দিয়া যান। আজ পর্য্যন্ত পৃথিবীর সর্ব্বত্র বৌদ্ধগণ প্রার্থনার সময়ে বলিয়া থাকেন—

(ব্রহ্ম ভাষায়)

বৌঢান্দরণ গিম্সামি (বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি)
ঢম্মান্দরণ গিম্‌সামি (ধর্ম্মং শরণং গচ্ছামি)
তঙ্গান্দরণ গিম্সামি (সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি)

বস্তুতঃ, কি ধর্ম্মপ্রচার, কি স্বদেশ সেবা সঙ্ঘ ও সঙ্ঘানুবর্ত্তিতা ভিন্ন কোনও মহান্‌ কাজ এ জগতে সম্ভবপর নয়।

আর একটী অভিযোগ আমি শুনিয়াছি—রাজনীতির আবর্ত্তে পড়িয়া দেশবন্ধুকে নাকি শিক্ষাদীক্ষাহিসাবে নিম্নস্তরের, লোকদিগের