পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৬
তরুণের স্বপ্ন

টেনে নিব, কারণ আমি অন্তরে যে আনন্দ পেয়েছি তাকে পার্থিব কোনও বস্তুই চেপে রাখতে পারে না! এই আনন্দই অনন্ত শক্তির আকর!]

 নীলকণ্ঠকে আদর্শ করে যে ব্যক্তি বলতে পারে—আমার মধ্যে আনন্দের উৎস খুলে গেছে, তাই আমি সংসারের সকল দুঃখ কষ্ট নিজের বুকের মধ্যে টেনে নিতে পারি; যে ব্যক্তি বলতে পারে—আমি সব যন্ত্রণা ক্লেশ মাথায় তুলে নিচ্ছি, কারণ এর ভিতর দিয়ে আমি সত্যের সন্ধান পেয়েছি—সেই ব্যক্তিই সাধনায় সিদ্ধ হয়েছে।

 আমাদের আজ এই সাধনায় সিদ্ধ হতে হবে। নূতন ভারত যারা সৃষ্টি করতে চায়, তাদের কেবল দিয়ে যেতে হবে—সারাজীবন কেবল দিয়ে যেতে হবে—নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে কাঙ্গাল হয়ে যেতে হবে—প্রতিদানে কিছু না চেয়ে। নিঃশেষে জীবন দান করেই জীবনের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যারা এরূপ সাধক হবে তাদের সম্পদ থাকবে কেবল অন্তরের আত্মবিশ্বাস, আদর্শানুরাগ ও আনন্দবোধ।

 কয়েকদিন পূর্ব্বে আমার ছাত্রস্থানীয় একজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা হওয়াতে সে আমাকে কতকগুলি নৈরাশ্যব্যঞ্জক ও অবিশ্বাসপূর্ণ প্রশ্ন করে। তার প্রশ্নের ভাব এই, আমাদের দেশের কিছুতেই কিছু হবে না। কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিবার পর সে আমাকে জিজ্ঞাসা করলে—কাউন্সিলে গিয়ে, গভর্ণমেণ্টকে বাধা প্রদান ক’রে ও মন্ত্রীদের তাড়িয়ে কি হবে? আমি উত্তরে বললাম—এসব না ক’রেই বা কি হবে? তার পর তার অবিশ্বাস ও অশ্রদ্ধার ভাবকে লক্ষ্য করে আমি বললাম—“দেখ, তোমার বয়স আমার চেয়ে অনেক কম; আদর্শের প্রেরণায় তোমরা অসহযোগের পথে নেমেছ। আমার বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে আমার idealism (আদর্শানুরাগ) বেড়ে চলেছে, কিন্তু তোমার idealism