পাতা:তরুণের স্বপ্ন - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২০
তরুণের স্বপ্ন

নেতা সৃষ্টি করে নিয়ে কাজে লেগে যাও। নেতা আকাশ থেকে পড়ে না—কাজের মধ্যে দিয়ে নেতা গড়ে ওঠে। তার পর—“কঃ পন্থা?” ব’লে তোমরা যে মাথার হাত দিয়ে বসেছ—তা করলে চলবে না। নিজেদের বিবেক-বুদ্ধির আলোকে তোমরা নিজেরাই পথ আবিষ্কার কর। সমস্যাটা যত জটিল মনে কর, ততটা জটিল নয়। আমাদের আদর্শ এই যে, আমরা একটা সর্ব্বাঙ্গসুন্দর জাতি গড়ে তুলতে চাই—যে জাতি জ্ঞান ও কর্ম্মে, শিক্ষা ও ধর্ম্মে পৃথিবীর সর্ব্বশ্রেষ্ঠ স্বাধীন জাতিদের পাশাপাশি দাঁড়াতে পারবে। অতএব জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রেই জাগরণ আনতে হবে। কোনও দিকটা বাদ দিলে চলবে না। যার যেরূপ শক্তি ও আকাঙ্ক্ষা, তাকে তদনুরূপ কর্ম্মক্ষেত্র ঠিক করে নিতে হবে। যার যেরূপ জন্মলব্ধ বা ভগবদ্দত্ত ক্ষমতা—তাকে সেই ক্ষমতাই ফুটিয়ে তুলে দেশমাতৃকার চরণে তাহা অঞ্জলিস্বরূপ নিবেদন করতে হবে।

 গত বিশ বৎসরের মধ্যে বাঙ্গালা দেশে অনেক সাধক, কবি, সাহিত্যিক, বিজ্ঞানবিদ, কর্ম্মবীর ও জননায়ক আবির্ভূত হয়েছেন। তাঁহাদের মধ্যে অনেকে স্বীয় কর্ত্তব্য সম্পাদন ক’রে দেশবাসীকে চোখের জলে ভাসিয়ে, পরলোক গমন করেছেন। তাঁহাদের পরিত্যক্ত স্থানের মধ্যে অনেকগুলি এখনও কেউ দখল করতে পারেন নাই। এটা কি বাঙ্গালীর পক্ষে কম লজ্জার কথা? বাঙ্গালী যদি বেঁচে থাকে তবে এই শূন্য স্থানের মধ্যে অধিকাংশগুলি যাতে শীঘ্র অধিকৃত হয় তার জন্য মানুষের সৃষ্টি হওয়া উচিত। জাতি যতদিন প্রকৃতপক্ষে বেঁচে থাকে ততদিন শূন্য স্থানগুলি এমন ভাবে পড়ে থাকে না—মহাপুরুষদের অন্তর্ধানের পর নূতন মনীষিগণ এসে তাঁদের স্থান অধিকার করেন। যে জাতি অনন্যমনা হয়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাধনায় নিরত থাকে—সে জাতির মধ্যে