তাহাদের সংশয়াপনোদন হইল না। কারণ অচিরকালের মধ্যে আফগান সেনা সকল সজ্জীভূত ও দল বদ্ধ হইয়া যুদ্ধাকাঙক্ষায় অগ্রসর হইল। তখন পৃথ্বীরাজ প্রভৃতি সকলে যুদ্ধ সজ্জা করিতে লাগিলেন। এই রূপে উভয় দল ক্রমে ক্রমে সন্নিহিত হইতে লাগিল। এক দিন ঊষার প্রাক্কালে দিন মণি পূর্ব্ব দিক হইতে অলক্তাক্তের ন্যায় উদয় হইতেছেন দেখিয়া কুমুদিনী নায়ক স্বীয় সকলঙ্ক কর নিকর সংযত করিয়া অস্তাচলাভিমুখী হয়েন, যখন নলিনী কুল ঈষদ্বিকাশিত হইল, কহ্লার সমূহ দলাবগুণ্ঠন অবলম্বন করিল, মৃগগণ মৃগধরের অদর্শনে আনন্দাতিশয় সহকারে বন হইতে বনান্তরে গমন করিতে লাগিল, পেচকাদির দৃষ্টি পথ অবরুদ্ধ বিলোকনে নিরীহ বিহঙ্গম সকল আপনআপন শাবক সমূহকে স্ব স্ব রবে আহার প্রদান করিয়া ভোজনানুসন্ধানে গমনোদ্যত হইল, প্রভাতানিল মন্দ মন্দ সঞ্চরণ দ্বারা জীব লোকের আনন্দ সম্পাদন করিতে লাগিল, এমন সময়ে উহাদের উভয় দলে সংগ্রাম আরম্ভ হইল। সংগ্রামের কথা কি বলিব! এমন সংগ্রাম কখন কাহারও নয়নাদর্শে দর্শিত হইয়াছে কি না সন্দেহ। যুদ্ধ স্থল কি অপূর্ব্ব ভয়ঙ্কর রূপই ধারণ করিয়াছে! দেখিলে হৃদয়ের রক্ত শুকাইয়া যায়। গজে গজে, অশ্বে অশ্বে, তীরে তীরে, ধনুতে ধনুতে, পদাতিতে পদাতিতে, যুদ্ধ হইতে লাগিল। এমনি ভয়ঙ্কর শব্দ হইতে লাগিল যে দূরবর্তী লোক সকল শুনিয়া একটা মহাভাবী বিপদ আশঙ্কা করিতে লাগিল। এক জন মহাবলশালী
পাতা:তারাচরিত.pdf/৩৪
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
২৩