পাতা:তারাচরিত.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
তারাচরিত।

পৃথ্বীরাজ গদগদ কায় হইয়া স্বীয় শিবিরে প্রতিগমন করিলেন। এদিকে মালতী শুনিলেন যে তার প্রাণ সখী রণজয়ী হইয়া আসিয়াছেন। শুনিয়া তিনি যেমন তাড়াতাড়ি আসিতেছিলেন অমনি সম্মুখে তারাকে দেখিতে পাইলেন। তারা অমনি মালতীকে প্রিয় সম্বোধন করিয়া বলিলেন সখি কোথায় যাইতেছ? এই বলিয়া দুইজনে দুইজনকে কোমল মৃণাল ভুজযুগল দ্বারা বেষ্টন করিলেন। মালতী বলিলেন অদ্য কি সুপ্রভাত হইয়াছিল যে, তোমার বদন কমল নিরীক্ষণ করিলাম। সজনি তোমার গমনাবধি আমি মৃত প্রায় ছিলাম। অদ্য মর দেহে জীবন দান পাইলাম। অদ্য জলদ জাল হইতে পূর্ণ শশধর উদয় হইল। অদ্য চাতকিনীর প্রয়াস পরিতৃপ্ত হইল। ঘন দরশনে যেমন সর্ব্বলোক আহলাদিত হয় আমি তাহার অপেক্ষা ও আহলাদিত হইলাম। সখি বলিতে কি এখন কেবল আমার মন তোমার পরিণয় প্রতীক্ষা করিতেছে। এই বলিতে বলিতে দুইজনে শয়ন গৃহাভিমুখে গমন করিলেন।

 রাজাজ্ঞায় তারার বিবাহের উদ্যোগ হইতে লাগিল। নগরী উৎসবময় হইল। চতুর্দ্দিকের লোক সকল রাজকুমারী তারার পরিণয় হইবেক শুনিয়া আহলাদে ভাসমান হইয়া আসিতে লাগিল। কি ছোট কি বড়, কি ধনী কি নির্ধন, সকলেরই মুখ প্রফুল্ল কমলবৎ ভাসিতেছে। নগর এইরূপে সাজান হইল যে, দেখিয়া সকল লোক চমৎকৃত হইল, এবং, বলিতে লাগিল যে, নাই বা হইবে কেন, তারার বিবাহ। এই