বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তারাচরিত.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৪৫

এই বলিয়া নীরব হইলেন। তখন তারা ভাবি বিরহের আশঙ্কায় কিয়ৎক্ষণ মৌনাবলম্বন করিয়া তাহার পর বলিলেন, নাথ, তোমার যাওয়া হইবে না, আমি কেমন করিয়া তোমার বিচ্ছেদ সহ্য করিব! শুনিয়া পৃথ্বীরাজ বললেন, প্রিয়তমে ভাবনা কি আমি সেখানে থাকিবার নিমিত্ত যাইতেছি না, কেবল সেই দুর্বৃত্তের দমনের নিমিত্ত যাইতেছি। প্রিয়ে ভয় নাই, আমি অল্পদিনের মধ্যে আসিয়া তোমার বদন চন্দ্রিমা দর্শন করিয়া আমার নয়ন চকোরকে তৃপ্ত করিব। এই সকল শুনিয়া যখন তারা জানিলেন যে সত্যসত্যই পৃথ্বীরাজ চলিলেন, তখন তিনি সজললোচনে বলিতে লাগিলেন, নাথ অদ্য কেন আমার প্রাণ বিহঙ্গম দেহ পিঞ্জর হইতে প্রয়াণের চেষ্টা পাইতেছে? অদ্য কেন আমার দক্ষিণ আঁখি স্পন্দিত হইতেছে? আমার মন কেন বিপদের আশঙ্কা করিতেছে? নাথ কল্য যখন নিশি প্রভাত হইয়াছে তখন আমি এক অমঙ্গলকর স্বপ্ন দেখিয়াছি, তাই প্রাণনাথ এতক্ষণ তোমাকে আমি আলিঙ্গন করি নাই। দেখিলাম যেন তোমাকে হৃদয়ে লইয়া আমি অসংখ্য পর্ব্বত নদ নদী নগর গ্রাম বন উপবন সকল পরিত্যাগ করিরা পলায়ন করিতেছি; যেমন আমি তোমাকে লইয়া দ্রুতবেগে যাইব অমনি তুমি আমার হৃদয় হইতে পড়িয়া গেলে। আমি সেই অবধি আর দেখিতে পাইলাম না। নাথ আমার হৃদয় সেই জন্যই ব্যাকুল হইতেছে। আমার মন সেই জন্যই তোমাকে আর ছাড়িতে চাহিতেছে না। প্রাণনাথ তোমার