পাতা:তারাচরিত.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
তারাচরিত।

নিমিত্ত আমি এক ক্ষণ ও কোথাও থাকিতে পারিতেছি না। আর, আমার মনের আজ এ ভাব হইতেছে কেন? সততই যেন ইচ্ছা করিতেছে যে তোমাকে বক্ষস্থলে ধারণ করি, তোমর পূর্ণ সুধাকর মুখ আমি দিবা রাত্রি দেখি, এবং তোমার এই অসীম সৌন্দর্য্যশালী রূপ রাশি যেন এক ক্ষণ অন্তর হইতে না অন্তর করি। আমার কর্ণ তোমার সুধা বিনিন্দিত বাক্য শুনিতে চাহিতেছে; আমার চক্ষু তোমার সৌন্দর্য্য দেখিতে লোলুপ হইতেছে; আমার নাসিকা তোমার গায়ের সুগন্ধ ঘ্রাণের ইচ্ছা করিতেছে; আমার হস্ত তোমার পদ সেবা করিবার ইচ্ছা প্রকাশ করিতেছে। নাথ আমার চরণ প্রতিক্ষণে তোমার সহিত ধাবমান হইবার চেষ্টা করিতেছে, আমার নিমিত্ত যাইতে পারিতেছে না। তারা এই বলিয়া রোদন করিতে আরম্ভ করিলে পৃথ্বীরাজ বলিলেন প্রিয়ে তোমার অন্তর কোমল-কমল অপেক্ষায় কোমল— তুমি কেন মিছা চিন্তা তরঙ্গে মনকে বিলোড়িত করিতেছ এবং অনর্থক কষ্ট দিতেছ? এই বলিয়া তিনি তারাকে বুঝাইয়া তাঁহার নিকট বিদায় লইয়া শিরোহি অভিমুখে যাত্রা করিলেন। তারা চিত্তপুত্তলিকার ন্যায় দণ্ডায়মান রহিলেন।

 তারার পাণিগ্রহণের পর পৃথ্বীরাজ কত যুদ্ধেই গমন করিয়া জয় লাভ করিয়া ছিলেন। কোন কোন যুদ্ধে তারা তাঁহার সমভিব্যাহারিণীও হইয়ছিলেন; কিন্তু অনেক যুদ্ধেই তাঁহার যাওয়া ঘটে নাই। তাাঁ বলিয়া যে তিনি তাঁহার যুদ্ধ যাত্রা কালে কোন বাবে কোন প্রকার আপত্তি করিয়াছিলেন