তোমার দয়া হইল না! নাথ আমাদের মন যে প্রেম পাশে বাঁধা ছিল, মনে করিয়াছিলাম যে জীবন থাকিতে আর কখন বিচ্ছেদ হইবে না। প্রাণনাথ আমার হৃদয় যে তোমার বিশ্বাসের বাস স্থান ছিল, আমার মন যে তোমাকে ও সেইরূপ ভাবিত। তা- কেন গোপনে গোপনে পলায়ন করিলে? নাথ এই প্রেমের বন্ধন চ্ছেদন করিয়া যাইতে তোমার চরণযুগল কেমন করিয়া চলিল? নাথ তোমার সেই সরল মনে কেমন কবিয়া এ ভাবের উদয় হইল? হায় সেই দয়ার সাগর হৃদয় কেমন করির এত কঠিন হইল? আমার ভাগ্য দোষেই হইয়াছে, তোমার দোষ নাই। হায়, তোমার সেই সরল স্বভাব এখন কোথায় রহিল! কোথায় সেই সাগর সদৃশ ভালবাসা রহিল! প্রভু সকলি যে নিশার সঙ্গের তুল্য মনে হইতেছে। আমরা দুই জনে বিরলে বসিয়া ভাবপূর্ণ যে সকল কথা বলিতাম সেই সকল কথা মনে পড়িয়া যে হৃদয় দগ্ধ হইতেছে! যদি কখন আমাকে বিষাদিত দেখিতে তাহা হইলে যে তোমার ক্ষোভের সীমা থাকিত না। আমাদের দুইজনকে দেখিয়া সকলে বলিত যে এমন বিশুদ্ধ প্রণয় আর ধরাতলে নাই। ভাবিত যে ইহারা বুঝি অভেদ আত্মা হইবে। নাথ সে সকল এখন স্মরণ করিয়া যে হৃদয় দগ্ধ হইতেছে! যে প্রেমে আমাকে নিজ জীবনের অধিক ভাবিতে, আর যে প্রেমে আর আর সকলি তোমার অলীক মনে হইত, যে প্রেমে তোমাকে আমি বাঁধিয়া ছিলাম, নাথ সেই প্রেম এখন কোথায় রহিল! হৃদয়বল্লভ, তুমি যদি
পাতা:তারাচরিত.pdf/৬৪
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।
৫৩