পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
৯৭

 ‘অ তিলক! সে নাই আমার! হাওরে-ডাকাতি হইয়া গেছে।’

 একটা হাত বাক্সে বেসাতের মুনাফা দুই শত টাকা ছিল। তালাস করিতে গিয়া তিলক দেখিতে পাইল না। বাক্স সুদ্ধ তাহাও লইয়া গিয়াছে।

 ‘হায়, কি হইল রে’ বলিয়া কিশোর পাগলের মত গলা ফাটাইয়া এক চীৎকার দিল। চারিপাশের জলোচ্ছ্বাসের উপর দিয়া সেই চীৎকার-ধ্বনি ধীরে ধীরে ডুবিয়া গেল। কোনো প্রতিধ্বনিও আসিল না।

 এদিকে মাঝ-মোহানার জলের উচ্ছ্বাস-ধ্বনি ক্রমেই নিকটবর্তী হইতেছে। নৌকাটা চুম্বকের মত আকৃষ্ট হইয়া সেদিক লক্ষ্য করিয়া চলিয়াছে। আর আকাশে তখন অজস্র জ্যোৎস্না।

 তিলক সচেতন হইয়া বলিল, ‘সুব্‌লা, পাছায় গিয়া হালের কোরায় হাত দে।’

 প্রবলভাবে আপত্তি জানাইয়া কিশোর বলিল, ‘না না তিলক, নাও আর ফিরাইও না। যার দিকে রোখ করছে তার দিকেই যাউক।’

 সুবল ও তিলকের আপ্রাণ চেষ্টায় নৌকাখানা কোনমতে আসন্ন ধ্বংসের হাত হইতে রক্ষা পাইল। রাত্রির বিভ্রান্তিতে কূল-কিনারা দেখা যাইতেছিল না; তাহাও শেষে পাওয়া গেল। রাতটা বিশ্রী রকমের দীর্ঘ। ফুরাইতেছিল না। অবশেষে তাহাও ফুরাইয়া সকাল হইল। কিন্তু রাতের