আবার রাত আসিল। রাত গভীর হইল। এবং এক সময়ে ফুরাইয়া গেল।
পূবদিকের আকাশ খোলাসা হইয়া আসিতেছে। কিশোর কি ভাবিয়া উঠিল। মাঝ নৌকায় দাঁড়াইয়া সেদিকে কতক্ষণ তাকাইয়া রহিল। তারপর গলুইয়ে গিয়া হাত বাড়াইয়া জল স্পর্শ করিল।
হাত জলে লাগে নাই। কিসে যেন লাগিয়াছে। কিন্তু বড় নরম। আর কি ভীষণ ঠাণ্ডা। ঘার বাড়াইয়া চাহিয়া দেখিল, স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। দেখিয়া কিশোর খুব জোরে একটা চিৎকার দিল।
একটা নারীদেহ ভাসিয়া রহিয়াছে। কোমর হইতে পা অবধি একেবারে খাড়া জলের নীচে। বুকটা চিতাইয়া ভাসিয়া উঠিয়াছে। গলা টান হইয়া মাথা পিছন দিকে ঢলিয়া রহিয়াছে। লম্বা চুলগুলিকে লইয়া তিতাসের মৃদু স্রোত টানাটানি করিতেছে।
‘অ তিলক, দেইখ্যা যাও!’
চোখ কচলাইয়া তিলক বলিল, ‘কি কিশোর।’
‘তারে পাওয়া গেছে।’
তিলক উঠিয়া আসিয়া মড়াটাকে দেখিয়া, রাম রাম বলিতে বলিতে সুবলকে ডাকিয়া তুলিল। তারপর কালবিলম্ব না করিয়া নৌকা ছাড়িয়া দিল।
কিশোর ছইয়ের ভিতর চুপ করিয়া বসিয়াছিল।