পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
১১৯

সেখানা আনিয়া বিছাইয়া দিবে কিনা ভাবিতেছে। তারা ভাবিবার অবসর না দিয়া মাটিতেই বসিয়া পড়িল।

 একজন বলিল, ‘পান আছে মা?’

 আরেকজন বলিল, ‘তামুক খাওয়া। আছে নি হুক্কা-কল্‌কি? তামুক আছে নি?’ অনন্তর মা মাটির সঙ্গে মিশিয়া যাইতে থাকে। তার ঘরে এসবের কিছুই নাই।

 একজন কোমর হইতে সুচারু কাজ-করা একটি ছোট রঙিন থলে বাহির করিয়া হাতে হাতে পান বাটিয়া দিল। অনন্তর মাকেও একটা পান লইতে হইল। সে-নারীর দাঁতগুলি পানে কালোবর্ণ। দুই তিনটা পান গালে পুরিয়া আঙ্গুলের ডগায় খানিকটা চুন লাগাইল। চিবানোর ফাঁকে ফাঁকে তারই খানিকটা দাঁতে লাগাইতেছে। মুখখানা হইয়াছে টকটকে লাল। অনন্তর মা অবাক হইয়া তার দিকে চাহিয়া রহিল।

 ‘কি দেখছ্ মা, অপাক হইয়া? আমি খুব বেশি বটপাতা খাই না। আমি আর কত খাই! আমার শাশুড়িএ যা বটপাতা খাইত!’

 ‘বটপাতা?’ অনন্তর মা বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল।

 সে-নারী সঙ্গিনীর দিকে ইঙ্গিত করাতে কথাটা সে বুঝাইয়া দিল, ‘তাইনের শ্বশুরের নাম পাণ্ডব। পান কইতে পারে না, পানেরে কয় বটপাতা।’

 —‘আর তামুক খাইত আমার শ্বশুর। মাথায় এক ঝাঁকড়া