করিবে। এই ঠিক করিয়া সকলে নামিবার জন্য প্রস্তুত হইল। কিন্তু কার্যকালে শুধু এক ঐ বন্ধু নামিল, আর কেউ নামিল না। তারা বিশ্বাসঘাতকতা করিল। শেষে ঐ বন্ধু নৌকার ধাক্কায় চিত হইয়া পড়িয়া গেল। এক সে। না পড়িয়া উপায় আছে। নৌকা তার বুকখানা মথিয়া পিণ্ড করিয়া দিল। আর সে-নৌকা কার-নৌকা সবই জানি। কিন্তু বলিব না।
‘জান যদি, তবে কইবা না কেনে?’
‘চোখে জল আইয়া পড়ে দিদি। কইতে পারি না।’
‘একজনের কথা যে কইলা, সে মাইয়া কে?’
‘তার নাম বাসন্তী। সে অখন নাই। মারা গেছে।’
আবহাওয়া বড় করুণ ও ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিল। মঙ্গলার বৌ এই রকম আবহাওয়া সহিতে পারে না। হালকা করিবার জন্য কথা খুঁজিতে খুঁজিতে সহসা বলিয়া উঠিল—
‘আমিও জানি।’
মঙ্গলার বৌ বিজ্ঞের ভঙ্গিতে কথাটা বলিয়া খোলার একখানা পিঠার প্রতি এমন মনোযোগ দিল যেন দুই জনে পায়ে ধরিয়া সাধিলেও যা জানে তা খুলিয়া বলিবে না।
মঙ্গলার বৌর রসাল গল্পটা সুরু না হইতেই আবহাওয়া আবার থমথমে হইয়া পড়িল। আজ দুইটি নারীর মনের কোথায় যে কাঁটা বিঁধিতেছে কে বলিবে। পাগল চুপ করিয়া আছে দেখিয়া তাদের মন আরো বেশি দোলা খাইতে লাগিল।