পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তিতাস একটি নদীর নাম
১৫

প্রথম দৃষ্টিতেই সে তাকে ভালবাসিয়া ফেলিয়াছে, সেও কি তেমনি ভালবাসে নাই? কেমন অনুরাগের ভরে চাহিয়াছিল। আর কেমন মানুষ গো! একবার দেখিয়াই মনে হইল যেন কতবার দেখিয়াছি। বেলা ফুরাইতেছে। একটু একটু বাতাস বহিতেছে। আর সেই বাতাসে আমার শাড়ির বেড়া খুলিয়া গেল, আর তখনই তাকে আমি দেখিতে পাইলাম। যদি না খুলিত, তবে ত দেখিতেই পাইতাম না। এমনি কত লোককে যে আমরা দেখিতে পাই না। অথচ দেখিতে পাইলে এমনি করিয়া আপন হইয়া যাইত। আমরা কি আর দেখি? যে দেখাইবার, সে-ই দেখায়! তা না হইলে সে যখন জলে ঢেউ খেলাইয়া কলসী ডুবাইল, ঠিক সেই সময়ে আমার শাড়ির বাঁধন খুলিল কেন? বর্ষায় আমার বাপ ওদের গাঁয়ে ভিজা নালিতার আঁটি-বোঝাই নৌকা লইয়া যায়, পাট ছাড়াইবার জন্য। আবার যখন বাপের বাড়ি যাইব, বাপকে বলিয়া রাখিব, এই রকম এই রকম মেয়েটি, দেখিতে ঠিক আমার মত। তার বাপকে বলিয়া দেখিও, আমার মেয়ে তোমার মেয়ের সঙ্গে সই পাতিতে চায়, তুমি রাজি আছ কিনা।


 আগে যা বলিতেছিলাম।

 —এ শিল্পী মহাকালের তাণ্ডব-নৃত্য আঁকিতে পারে না। পিঙ্গল জটার বাঁধন খসিয়া পড়ার প্রচণ্ডতা এ-শিল্পীর তুলিকায় ধরা দিবে না। এ শিল্পী মেঘনা-পদ্মা-ধলেশ্বরীর তীর ছাড়িয়া তিতাসের তীরে আঙিনা রচনা করে।