পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪৬
তিতাস একটি নদীর নাম

 রমুর মার রাগ হইল। যত দোষ বুঝি আমার বাপের। আমার বাপ ঘুষ খায়; আমার বাপ চুরি করে; আমার বাপ ফল্‌না করে, তস্‌কা করে—কি যে না করে!

 তুই থাম্, ছাদির ধমক দিল।

 না, থামিব না, আমার বাপ যখন অত দোষের দোষী, তখন জানিয়া শুনিয়া এমন চোরের মাইয়া ঘরে আনিলে কেন? আর আনিলেই যদি, খেদাইয়া দিলে না কেন?

 খেদাইয়া দিলে আরেক খানে গিয়া খুব সুখে থাকিতে পারিতিস্, না?

 আহা, কত সুখেই না আছি এখানে!

 বিষমুখী তুই থামিবি, না চোপা বাজাইবি?

 ইস্ থামিবে। আমি বিষমুখী, আমার বাপ চোর, আবার থামিবে।

 রাগে ছাদির উঠিয়া গিয়া মারে আর কি। কাদির তাহাকে ঘাড় ধরিয়া বসাইয়া দিল।

 মেয়েটার মধ্যে এক বিদ্রোহের মূর্তি দেখা গেল এই প্রথম। কাদিরের মনে কোথায় যেন একটু খোঁচা লাগিল। মুহুরীর মেয়ে জোর গলায় বলিয়া চলিল, ‘চোর হোক ধাওর হোক, তারইত আমি মাইয়া। বাপ হইয়া মার মতন পালছে, খাওয়াইছে ধোয়াইছে—হাজার হোক, তবু বাপ। চোর হইলেও আমারই বাপ, আর কাউর বাপ না। আমি মরলে এই বাপেরই বুক খালি হইব। আর কোন বাপের বুক খালি হইব না।’

 ‘না হইব না! চোরের মাইয়ার আবার টাস-টাইস্যা