পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
তিতাস একটি নদীর নাম

নিতে চাহিলে কোনো জিনিস নিজে আঁকড়াইয়া থাকে না। কিন্তু বন্ধুর জন্য চোখ বুজিয়া ভাল জিনিস এমন ছাড়িয়াও কেউ দেয় না!


 সুবলের বাপ গগন মালোর কোনোকালে নাও-জাল ছিল না। সে সারাজীবন কাটাইয়াছে পরের নৌকায় জাল বাহিয়া। যৌবনে সুবলের মা ভর্ৎসনা করিত, ‘এমন টুলাইন্যা গিরস্তি কত দিন চালাইবা! নাও করবা, জাল করবা, সাউকারি কইরা সংসার চালাইবা! এই কথা আমার বাপের কাছে তিন সত্য কইরা তবে ত আমারে বিয়া করতে পার্‌ছ। স্মরণ হয় না কেনে?’

 কিন্তু নিশ্চেষ্ট লোককে ভর্ৎসনা করিয়া ফল পাওয়া যায় না।

 ‘খাইবা বুড়াকালে পরের লাত্থি উষ্ঠা; যেমন মানুষ তুমি।’

 গগন এসব কথায়ও কর্ণপাত করে নাই।

 বুড়া কাল যখন সত্যই আসিল, তখন বলিত, ‘অখন বুঝ নি?’ ইহার উত্তরে গগনচন্দ্র বলিত, ‘আমার সুবল আছে। আমি ত করতাম পারলাম না, নাও-জাল আমার সুবলে করব। অত ভেন্ ভেন্ করিস্ না।’

 কাজেই সুবলের বাপ যখন মারা যায়, সুবলকে নৌকা গড়াইয়া দিয়া যাইতে পারে নাই। সুবল ‘মাথা-তোলা’ হইয়া কিশোরের নৌকায় গিয়া উঠিল। এবং তার সঙ্গেই জাল বাহিয়া চলিল। নিজের নাও-জাল করার কথা আর তার