চারি দিকে শত শত দৈত্য-কুল-পতি
নানা উপহার সহ দাড়ায় বিনত-
ভাবে, সুপ্রসন্ন মুখে প্রশংসি দুজনে,
দৈত্য-কুল-অবতংস। দূরে নৃত্য-করী
নাচে, নাচে তারাবলী যথা নভস্তলে
স্বর্ণময়ী। বন্দে বন্দী মহানন্দ মনে,
“জয়, জয়, অমরারি, যার ভুজ-বলে
পরাজিত আদিতেয় দিতিসুত-রিপু
বজ্রী! জয়, জয়, বীর, বীর-চূড়ামণি,
দানব-কুল-শেখর! যার প্রহরণে,
করী যথা কেশরীর প্রচণ্ড আঘাতে
ত্যজি বন যায় দূরে,—স্বরীশ্বর আজি,
ত্যজি স্বর, বিশ্বধামে ভ্রমিছে একাকী
অনাথ! হে দৈত্য-কুল, উজ্জ্বল গো এবে
তুমি! হে দানব-বালা, হে দানব-বধূ,
কর গো মঙ্গল-ধ্বনি দানব-ভবনে!
হে মহি, হে মহীতল, তুমিও, হে দিব,
আনন্দ-সাগরে আজি মজ, ত্রিভুবন!
বাজাও মৃদঙ্গ রঙ্গে, বীণা, সপ্তস্বরা—
দুন্দুভি, দামামা, শৃঙ্গ, ভেরী, তূরী, বাঁশী,
শঙ্খ, ঘণ্টা, ঝাঁঝরী। বরিষ ফুল-ধারা!
কস্তুরী, চন্দন আন, কেশর, কুমকুম!
কে না জানে দেব-বংশ পর-হিংসাকারী?
না জানে দুষ্টমতি ইন্দ্র সুরপতি
অসুরারি? নাচ সবে তার পরাভবে,
মড়ক ছাড়িলে পুরী পৌরজন যথা।”
মহানন্দে সুন্দ উপসুন্দাসুর বলী
অমরারি, তুষি যত দৈত্যকুলেশ্বরে
মধুর সম্ভাষে, এবে, সিংহাসন ত্যজি,
উঠিলা,—কুসুমবনে ভ্রমণ প্রয়াসে,
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/১০২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৩৫৮—৩৮৭