নিশ্বাস ছাড়েন যেন সর্ব্বনাশকারী!
দানব, মানব, যক্ষ, রক্ষ, দানবারি—
দানবী, মানবী, দেবী, কিবা নিশাচরী
সকলেরি অগম—দুর্গম দুর্গ যেন!
দিবানিশি মেঘরাশি উড়ে চারি দিকে,
ভূতনাথসঙ্গে রঙ্গে নাচে ভূত যেন।
এ হেন নির্জ্জন স্থানে দেব পুরন্দর
কেন গো বসিয়া আজি, কহ পদ্মাসনা
বীণাপাণি? কবি, দেবি, তব পদাম্বুজে
প্রণমি, জিজ্ঞাসে তোমা, কহ, দয়াময়ি!
তব কৃপা-মন্দর দানব-দেব-বল,
শেষের অশেষ দেহ—দেহ এ দাসেরে;
এ বাক্সাগর আমি মথি সযতনে,
লভি, মা, কবিতামৃত—নিরুপম সুধা!
অকিঞ্চনে কর দয়া, বিশ্ববিনোদিনি!
যে শশীর স্থান, মাতঃ, স্থাণুর ললাটে,
তাঁহারি আভায় শোভে ফুলকুলদলে
নিশার শিশিরবিন্দু, মুক্তাফলরূপে!—
কহ, সতি;—কি না তুমি জান, জ্ঞানময়ি?—
কোথা সে ত্রিদিব, যার ভোগ লভিবারে
কঠোর তপস্যা নর করে যুগে যুগে,
কত শত নরপতি রত অশ্বমেধে—
সাগর বিপুলবংশ যে লোভেতে হত?
কোথা সে অমরাপুরী কনকনগরী?
কোথা বৈজয়ন্ত-ধাম, সুবর্ণ আলয়,
প্রভায় মলিন যার ইন্দু, প্রভাকর?
কোথা সে কনকাসন, রাজছত্র কোথা,
রবির পরিধি যেন মেরু-শৃঙ্গোপরি—
উভয় উজ্জ্বলতর উভয়ের তেজে?
কোথা সে নন্দনবন, সুখের সদন।
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/২৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
২৫—৫৪