বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
১৪৫—১৭৪

লুটিলে কুলায় তার পর্ব্বত-কন্দরে,
শোকে অভিমানে মনে প্রমাদ গণিয়া,
আকুল বিহঙ্গ, তুঙ্গ-গিরি-শৃঙ্গোপরি,
কিম্বা উচ্চশাখ বৃক্ষশাখে বসে উড়ি;—
ধবল অচলে এবে চলিলা বাসব।
বিপদের কালজাল আসি বেড়ে যবে,
মহতজনভরসা মহত যে জন।
এই সুরপতি যবে ভীষণ অশনি-
প্রহারে চূর্ণিয়াছিলা শৈল-কুল-পাখা
হৈম, শৈলরাজস্থত মৈনাক পশিলা
অতলজলধিতলে—মান বাঁচাইতে!
যথা ঘোরতর বাত্যা, অস্থিরি নির্ঘোষে
গভীর পয়োধি নীর, ধরি মহাবলে
জলচর-কুলপতি মীনেন্দ্র তিমিরে,
ফেলাইলে তুলে কূলে, মৎস্যনাথ তথা
অসহায় মহামতি হয়েন অচল;
অভিমানে শিলাসনে বসিলা আসিয়া
জিষ্ণু-অজিষ্ণু গো আজি দানব-সংগ্রামে
দানবীরি! মহারথী বসিলা একাকী;
নিকটে বিকট বজ্র, ব্যর্থ এবে রণে,
কমল চরণে পড়ি যায় গড়াগড়ি,
প্রচণ্ড আঘাতে ক্ষতশরীর কেশরী
শিখরী সমীপে যথা—ব্যথিত হৃদয়ে!
কনক-নির্ম্মিত ধনু—রতন-মণ্ডিত,
(কাদম্বিনী ধনী যারে পাইলে অমনি
যতনে সীমন্তদেশে পরয়ে হরষে)
অনাদরে শোভে, হায়, পর্ব্বতশিখরে,
ধবল-ললাট-দেশ উজলি সুতেজে,
শশিকলা উমাপতি-ললাট যেমতি।
শুন্য তূণ—বারিশূন্য সাগর যেমনি,