বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
২৬৫—২৯৪

যে অবধি, নলিনীর বিরহে কাতর,
নলিনীর সখা আসি নাহি দেন দেখা
কনক উদয়াচল-শিখরে, উজলি
দশ দিশ, হে স্বজনি, আইস তোমা দোঁহে,
সাধিতে এ কার্য্য মোরা করি প্রাণপণ।”
তবে নিশি, সহ নিদ্রা, স্বপ্ন কুহকিনী,
হাত ধরাধরি করি, বেড়িলা বাসবে—
সুবর্ণ চম্পকদাম গাঁথি যেন রতি
দোলাইলা প্রাণপতি মদনের গলে!
ধীরভাবে দেবীদল, বেড়িয়া দেবেশে,
যাঁর যত তন্ত্র, মন্ত্র, ছিটা, ফোঁটা ছিল,
একে একে লাগাইলা; কিন্তু দৈবদোষে,
বিফল হইল সব; যামিনী অমনি,
চঞ্চল বিস্ময়ে দেবী, মৃদু, কলস্বরে,—
একাকিনী, সুনাদিনী কপোতী যেমতি
কুহরে নিবিড় বনে—কহিতে লাগিল;—
“কি আশ্চর্য, প্রিয়সখি, দেখিলাম আজি!
কেবা জিনে ত্রিভুবনে আমা তিন জনে?
চিরবিজয়িনী মোরা যাই লো যে স্থলে!
সাগর মাঝারে, কিম্বা গহন বিপিনে,
রাজসভা, রণভূমে, বাসরে, আসরে,
কারাগারে, দুঃখ, সুখ, উভয় সদনে,
করি জয় স্বর্গে, মর্ত্ত্যে, পাতালে, আমরা;
কিন্তু সে প্রবল বল বৃথা হেথা এবে।”
শুনি স্বপ্নদেবী হাসি—হাসে শশী যথা—
কহিলা শ্যামা স্বজনী রজনীর প্রতি;
“মিছে খেদ কেন, সখি, কর গো আপনি?
দেবেন্দ্ররমণী ধনী পুলোমদুহিতা
বিনা, আর কার সাধ্য নিবাইতে পারে
এ জ্বলন্ত শোকানল? যদি আজ্ঞা দেহ,