যাই আমি আনি হেথা সে চারুহাসিনী।
হায়, সখি, পতিহীনা কপোতী যেমতি,
তরুবর, শৃঙ্গধর সমীপে, বিলাপি
চাহে কাস্তে সীমন্তিনী, বিরহবিধুরা,
ভ্রান্তি-দূতী সহ সতী ভ্রমেন জগতে,
শোকে! শুন মন দিয়া, রজনি স্বজনি,
যদি আজ্ঞা কর তবে এখনি যাইব।”
যাও বলি আদেশিলা শশাঙ্করঙ্গিণী।
চলিলা স্বপনদেবী নীলাম্বর-পথে—
বিমল তরলতর রূপে আলো করি
দশ দিশ; আশুগতি গেলা কুহকিনী,
ভূপতিত তারা যেন উঠিল আকাশে।
গেলা চলি স্বপ্নদেবী মায়াবী সুন্দরী
দ্রুতবেগে; বিভাবরী নিদ্রাদেবী সহ
বসিলা ধবল শৃঙ্গে; আহা, কিবা শোভা!
যুগল কমল, যেন জগৎ মোহিতে,
ফুটিল এক মৃণালে ক্ষীর-সরোবরে!
ধবল শিখরে বসি নিদ্রা, বিভাবরী,
আকাশের পানে দোঁহে চাহিতে লাগিলা,
হায় রে, চাতকী যথা সতৃষ্ণ নয়নে
চাহে আকাশের পানে জলধারা-আশে!
আচম্বিতে পূর্ব্বভাগে গগনমণ্ডল
উজ্জ্বলিল, যেন দ্রুত পাবকের শিখা,
ঠেলি ফেলি দুই পাশে তিমির-তরঙ্গ,
উঠিল অম্বর-পথে; কিম্বা ত্বিষাম্পতি
অরুণ সারথি সহ স্বর্ণচক্র রথে
উদয় অচলে আসি দরশন দিলা।
শতেক যোজন বেড়ি আলোক-মণ্ডল
শোভিল আকাশে, যেন রঞ্জনের ছটা
নীলোৎপল-দলে, কিম্বা নিকষে যেমতি
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩৫
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯৫—৩২৪
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : প্রথম সর্গ
১৩