বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৫৫—৩৮৪
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : প্রথম সর্গ
১৫

বসন্ত, হিমান্তে, ভারে উড়ায় কৌতুকে!
ভূবনমোহিনী দেবী, বসি মেঘাসনে,
আইলা অন্বয়পথে মৃদুমন্দগতি,—
নীলাম্বু সাগর-মুখে নীলোৎপল-দলে
যথা রমা সুকেশিনী কেশবাসনা,
সুরাসুর মিলি যবে মথিলা সাগরে!
হায়, ও কি অশ্রু কবি হেরে ও নয়নে?
অরে রে বিকট কীট, নিদারুণ শোক,
এ হেন কোমল ফুলে বাসা কি রে তোর—
সর্ব্বভুক্ সম, হায়, তুই দুরাচার
সর্ব্বভুক্? শূন্যমার্গে কাঁদেন বিষাদে
একাকিনী স্বরীশ্বরী! চল, ঘনপতি!
ঘন-কুলোত্তম তুমি, উড় দ্রুতবেগে।
তুমি হে গন্ধমাদন, তোমার শিখরে
ফলে সে দুর্লভ স্বর্ণলতিকা, পরশে
যাহার, শোকের শক্তি-শেলাঘাত হতে
লভিবেন পরিত্রাণ বাসব সুমতি!
আইলা পৌলোমী সতী মেঘাসনে বসি,
তেজোরাশি-বেষ্টিতা; নাদিল জলধর;
সে গভীর নাদ শুনি, আকাশসম্ভবা
প্রতিধ্বনি সপুলকে বিস্তারিলা তারে
চারি দিকে; কুঞ্জবন, কন্দর, পর্ব্বত,
নিবিড় কানন, দূর নগর, নগরী,
সে স্বর-তরঙ্গ রঙ্গে পুরিল সবারে।
চাতকিনী জয়ধ্বনি করিয়া উড়িল
শূন্য পথে, হেরি দূরে প্রাণনাথে যথা
বিরহবিধুরা বালা, ধায় তার পানে।
নাচিতে লাগিল মত্ত শিখিনী সুখিনী:
প্রকাশিল শিখী চারু চন্দ্রক-কলাপ;
বলাকা, মালায় গাঁথা, আইলা ত্বরিতে