বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৩৮৫—৪১৪

যুড়িয়া আকাশপথ; সুবর্ণ কন্দলী
ফুলকুলবধূ সতী সদা লজ্জাবতী,
মাথা তুলি শূন্যপানে চাহিয়া হাসিল;
গোপিনী শুনি যেমনি মুরলীর ধ্বনি,
চাহে গো নিকুঞ্জপানে, যবে ব্রজধামে,
দাঁড়ায়ে কদম্বমূলে যমুনার কূলে,
মৃদুস্বরে সুন্দরীরে ডাকেন মুরারি।
ঘনাসন ত্যজি আশু নামিলা ইন্দ্রাণী
ধবলের পদদেশে। এ কি চমৎকার?
প্রভাকীর্ণ, তেজোময় কনকমণ্ডিত
সোপান দেখিলা দেবী আপন সম্মুখে—
মণি মুক্তা হীরক খচিত শত সিঁড়ি
গড়ি যেন বিশ্বকর্ম্মা স্থাপিলা সেখানে।
উঠিলেন ইন্দ্রপ্রিয়া মৃদু মন্দ গতি
ধবল শিখরে সতী। আচম্বিতে তথা
নয়ন-রঞ্জন এক নিকুঞ্জ শোভিল।
বিবিধ কুসুমজাল, স্তবকে স্তবকে,
বনরত্ন, মধুর সর্ববস্ব, স্মরধন,
বিকশিয়া চারি দিকে হাসিতে লাগিল—
নীল নভস্তলে হাসে তারাদল যথা।
মধুকর-নিকর আনন্দধ্বনি করি
মকরন্দ-লোভে অন্ধ আসি উত্তরিলা;
বসন্তের কলকণ্ঠ গায়ক কোকিল
বরষিলা স্বরসুধা; মলয় মারুত—
ফুল-ফুল-নায়ক প্রবর সমীরণ—
প্রতি অনুকূল-ফুল-শ্রবণ-কুহরে
প্রেমের রহস্য আসি কহিতে লাগিলা;
ছুটিল সৌরভ যেন রতির নিশ্বাস,
মন্মথের মন যবে মখেন কামিনী
পাতি প্রণয়ের ফাঁদ প্রণয়কৌতুকে