বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১৫—৪৪৪
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : প্রথম সর্গ
১৭

বিরলে! বিশাল তরু, ব্রততী-রমণ,
মঞ্জরিত ব্রততীর বাহুপাশে বাঁধা,
দাঁড়াইল চারি দিকে, বীরবৃন্দ যথা;
শত শত উৎস, রজস্তম্ভের আকারে
উঠিয়া আকাশে, মুক্তাফল কলরবে
বরষি, আর্দ্রিল অচলের বক্ষঃস্থল।
সে সকল জলবিন্দু একত্র মিশিয়া,
সৃজিল সত্বর এক রম্য সরোবর
বিমল-সলিল-পূর্ণ; সে সরে হাসিল
নলিনী, ভুলিয়া ধনী তপন-বিরহ
ক্ষণকাল! কুমুদিনী, শশাঙ্ক-রঙ্গিণী,
সুখের তরঙ্গে রঙ্গে ফুটিয়া ভাসিল!
সে সরোদর্পণে তারা, তারানাথ সহ,
সুতরল জলদলে কান্তি রজতেজে,
শোভিল পুলকে—যেন নূতন গগনে!
অবিলম্বে শন্বরারি-সখা ঋতুপতি
উতরিলা সম্ভাষিতে ত্রিদিবের দেবী।—
কার সঙ্গে এ কুঞ্জের দিব রে তুলনা?
প্রাণপতি সহ রতি ভূঞ্জে রতি যথা,
কি ছার সে কুঞ্জবন এ কুঞ্জের কাছে।
কালিন্দী আনন্দময়ী তটিনীর তটে
শোভে যে নিকুঞ্জবন—যথা প্রতিধ্বনি,
বংশীধ্বনি শুনি ধনী—আকাশদুহিতা—
শিখে সদা রাধানাম মাধবের মুখে,
এ কুঞ্জের সহ তার তুলনা না খাটে।
কি কহিবে কবি তবে এ কুঞ্জের শোভা?
প্রমদার পাদপদ্ম-পরশে অশোক
সুখে প্রসূনের হার পরে তরুবর;
কামিনীর বিধুমুখ-শীধু-সিক্ত হলে,
বকুল, ব্যাকুল তার মন রঞ্জাইতে,