শুনি সে মধুর বোল তরুদল যত,
রতিভ্রমে পুষ্পাঞ্জলি শত হস্ত হতে
বরষি, পুজিল স্তব্ধে রাঙা পা দুখানি।
কোকিল কোকিলা সহ মিলি আরম্ভিল
মদন-কীর্ত্তন-গান; চলিলা রূপসী—
যেখানে সুরাঙাপদ অর্পিলা ললনা,
কোকনদকুল ফুটি শোভিল সেখানে!
অদূরে দেখিলা দেবী অতি মনোহর
হৈম, মরকতময়, চারু সিংহাসন;
তাহার উপরে তরুশাখাদল মিলি,
আলিঙ্গিয়া পরস্পরে, প্রসারে কৌতুকে,
নবীন পল্লবছত্র, প্রবালে খচিত,
বেষ্টিত মাণিকরূপী মুকুলঝালরে;
সুপ্ত পীতাম্বর-শিরে অনন্ত যেমতি
(ফণীন্দ্র) অযুত ফণা ধরেন যতনে!
চারি দিকে ফুটে ফুল; কিংশুক, কেতকী
স্মর-প্রহরণ উভে; কেশর সুন্দর—
রতিপতি করে যারে ধরেন আদরে,
ধরেন কনকদণ্ড মহীপতি যথা;
পাটলি—মদন-তূণ, পূর্ণ ফুল-শরে;
মাধবিকা—যার পরিমল-মধু-আশে,
অনিল উম্মত্ত সদা; নবীনা_মালিকা—
কানন-আনন্দময়ী; চারু গন্ধরাজ—
গন্ধের আকর, গন্ধ-মাদন যেমতি;
চম্পক—যাহার আভা দেবী কি মানবী,
কে না লোভে ত্রিভুবনে? লোহিতলোচনা
জবা—মহিষমর্দ্দিনী আদরেন যারে;
বকুল—আকুল অলি যার সুসৌরভে;
কদম্ব—যাহার কান্তি দেখি, সুখে মজি,
রতির কুচ-যুগল গড়িলা বিধাতা;
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৪২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৫০৫—৫৩৫