রজনীগন্ধা—রজনী-কুন্তল-শোভিনী,
শ্বেত, তব শ্বেতভুজ যথা, শ্বেতভুজে!
কর্ণিকা—কোমল উরে যাহার বিলাসী
(তপন-তাপেতে তাপী) শিলীমুখ, সুখে
লভে সুবিরাম, যথা বিরাজেন রাজা
সুপট্ট-শয়নে; হায়, কর্ণিকা অভাগা
বরবর্ণ বৃথা যার সৌরভ বিহনে,
সতীত্ব বিহনে যথা যুবতীযৌবন!
কামিনী—যামিনী-সখী, বিশদ-বসনা
ধুতুরা যোগিনী যথা, কিন্তু রতি-দূতী,
রতি কাম সেবায় সতত ধনী রত!
পলাশ—প্রবালে গড়া কুণ্ডলের রূপে
ঝলকে যে ফুল বনস্থলী-কর্ণ-মূলে;
তিলক—ভবানী-ভালে শশিকলা যথা
সুন্দর! ঝুমুকা—যার চারু মূর্ত্তি গড়ি
সুবর্ণে, প্রমদা কর্ণে পরে মহাদরে!—
আর আর ফুল যত কে পারে বর্ণিতে?
এ সব ফুলের মাঝে দেখিলা রূপসী
শোভিছে অঙ্গনাকুল, ফুলরুচি হরি,
রূপের আভায় আলো করি বনরাজী;—
পর্ব্বতদুহিতা সবে—কনক-পুতলী,
কমলবসনা, শিল্পে কমলকিরীট,
কমল-ভূষণা, কমলায়ত-নয়না,
কমলময়ী যেমনি কমল-বাসিনী
ইন্দিরা! কাহার করে হৈম ধূপদান,
তাহে পুড়ি গন্ধরস, কুন্দুরু, অগুরু,
গন্ধামোদে আমোদিছে মুনিকুঞ্জবন,
যেন মহাব্রতে ব্রতী বসুন্ধরা-পতি
ধবল, ভূধরেশ্বর! কার হাতে শোভে
স্বর্ণথালে পাদ্য অর্ঘ্য; কেহ বা বহিছে
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৪৩
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৩৫—৫৬৪
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : প্রথম সর্গ
২১