বহুবাহু তরু-কোলে! যাঁর অন্বেষণে
ব্যগ্র তুমি, সে রতনে পাইবা এখনি—
দেখ তব পুরন্দরে ওই সিংহাসনে!”
নীরবিলা নগবালাদল, অরবিন্দ-
ভূষণা। সম্মুখে দেবী কনক-আসনে,
নন্দনকাননে যেন, দেখিলা বাসবে।
অমনি রমণী, হেরি হৃদয়-রমণে,
চলিলা দেবেশ-পাশে সত্বর গামিনী,
প্রেম-কুতূহলে; যথা বরিষার কালে,
শৈবলিনী, বিরহ-বিধুরা, ধায় রড়ে
কল কল কলরবে সাগর উদ্দেশে,
মর্জিতে প্রেমতরঙ্গ-রঙ্গে তরঙ্গিণী।
যথা শুনি চিত্ত-বিনোদিনী বীণাধ্বনি,
উল্লাসে ফণীন্দ্র জাগে, শুনিয়া অদূরে
পৌলোমীর পদ-শব্দ—চির পরিচিত—
উঠিলেন শচীপতি শচী-সমাগমে!
উম্মীলিমা আখণ্ডল সহস্র লোচন,
যথা নিশা-অবসানে মানস-সুসরঃ
উম্মীলে কমল-ফুল; কিম্বা যথা যবে
রজনী শ্যামাঙ্গী ধনী আইসে মৃদুগতি,
খুলিয়া অযুত আঁখি গগন কৌতুকে
সে শ্যাম বদন হেরে—ভাসি প্রেম-রসে!
বাহু পসারিয়া দেব ত্রিদিবের পতি
বাঁধিলা প্রণয়পাশে চারুহাসিনীরে
যতনে, রতনাকর শশিকলা যথা,
যবে ফুল-কুল-সখী হৈমময়ী ঊষা
মুক্তাময় কুণ্ডল পরান ফুলকুলে!
“কোথা সে ত্রিদির, নাথ?”—ভাসি নেত্রনীরে
কহিতে লাগিলা শচী—“দারুণ বিধাতা
হেন বাম মোর প্রতি কিসের কারণে?
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৪৫
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৯৫—৬২৪
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : প্রথম সর্গ
২৩