বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৫৮—৮৭

চপলা, বা অবরোধে যথা কুলবধূ —
ললিতা, ভুবনস্পৃহা, প্রফুল্ল-যৌবনা;
নারী-অরবিন্দ সহ ইন্দু মহামতি,
হেরি ত্রিদিবের ইন্দ্রে দূরে, প্রণমিলা
নম্রভাবে; যথা যবে প্রলয়-পবন
নিবিড় কাননে বহে, তরুকুলপতি
ব্রততী-সুন্দরীদল শাখাবলী সহ,
বন্দে নমাইয়া শির অজেয় মারুতে।
এড়াইয়া চন্দ্রলোকে, দেবরথ দ্রুতে
উতরিল বসে যথা রবির মণ্ডলী
গগনে। কনকময়, মনোহর পুরী,
তার চারি দিকে শোভে, মেখলা যেমতি
আলিঙ্গয়ে অঙ্গনার চারু কৃশোদরে
হরষে পসারি বাহু,—রাশিচক্র; তাহে
রাশি-রাশির আলয়। নগর মাঝারে
একচক্র রথে দেব বসেন ভাস্কর।
অরুণ, তরুণ সদা, নয়নরমণ
যেন মধু কাম-বঁধু,—যবে ঋতুপতি
বসন্ত, হিমান্তে, শুনি পিককুলধ্বনি,
হরষে তুষেন আসি কামিনী মহীরে,
কাতরা বিরহে তাঁর,—বসেছে সম্মুখে
সারথি। সুন্দরী ছায়া, মলিনবদনা,
নলিনীর সুখ দেখি দুঃখিনী কামিনী
বসেন পতির পাশে নয়ন মুদিয়া,—
সপত্নীর প্রভা নারী পারে কি সহিতে?
চারি দিকে গ্রহদল দাড়ায় সকলে
নতভাবে, নরপতি-সমীপে যেমতি
সচিব। অন্বরতলে তারাবৃন্দ যত—
ইন্দীবর-নিকর—অদুরে হাসি নাচে,
যথা, রে অমরাপুরি, কনক-নগরি,