বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮—২৯৭
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : দ্বিতীয় সর্গ
৩৫

যে বিধির বরে বসি দেবরাজাসনে
আমি ইন্দ্র, মোর প্রতি প্রতিকূল তিনি,
না জানি কি দোষে, এবে! হায়, এ কাম্মু ক
বুথা আজি ধরি আমি এই বাম করে;
এ ভীষণ বজ্র আজি নিস্তেজ পাবক!”
শুনি দেবেন্দ্রের বাণী, কহিতে লাগিলা
অন্তক, গম্ভীর স্বরে গরজে যেমতি
মেঘকুলপতি কোপে, কিম্বা বারণারি,
বিদরি মহীর বক্ষ তীক্ষ্ণ বজ্র-নখে—
রোষী;—“না বুঝিতে পারি, দেবপতি, আমি
বিধির এ লীলা? যুগে যুগে পিতামহ
এইরূপে বিড়ম্বেন অমরের কুল;
বাড়ান দানবদর্প, শৃগালের হাতে
সিংহেরে দিয়া লাঞ্ছনা। তুষ্ট তিনি তপে;—
যে তাঁহারে ভক্তিভাবে ভজে, তার তিনি
বশীভূত; আমরা দিক্‌পালগণ যত
সতত রত স্বকার্য্যে,—লালনে পালনে
এ ভব-মণ্ডল, তাঁরে পূজিতে অক্ষম
যথাবিধি! অতএব যদি আজ্ঞা কর,
ত্রিদিবের পতি, এই দণ্ডে দণ্ডাঘাতে
নাশি এ জগৎ, চূর্ণ করি বিশ্ব, ফেলি
স্বর্গ, মর্ত্ত্য, পাতাল—অতল জলতলে।
পরে এড়াইয়া সবে সংসারের দায়,
যোগধর্ম্ম অবলম্বি, নিশ্চিন্ত হইয়া
তুষিব চতুরাননে, দৈত্যকুলে ভুলি,
তুলি এ দুঃখ, এ সুখ। কে পারে সহিতে—
হায় রে, কহ, দেবেন্দ্র, হেন অপমান?
এই মতে সৃষ্টি যদি পালিতে ধাতার
ইচ্ছা, তবে বৃথা কেন আমা সবা দিয়া
মথাইলা সাগর? অমৃত-পানে মোরা