বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮৮—৪১৭
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : দ্বিতীয় সর্গ
৩৯

যথা পদ্মযোনি পদ্মাসন পিতামহ।
এ বিপুল বিশ্ব নাশে, সাধ্য কার হেন,
তিনি বিনা? হে অন্তক বীরবর, তুমি
সর্ব্ব-অন্তকারী, কিন্তু বিধির বিধানে।
এই যে প্রচণ্ড দণ্ড শোভে তব করে,
দণ্ডধর, যাহার প্রহারে ক্ষয় সদা
অমর অক্ষয়দেহ, চূর্ণ নগরাজা,
এ দণ্ডের প্রহরণ, বিধি আদেশিলে,
বাজে দেহে,—সুকোমল ফুলাঘাত যেন,—
কামিনী হানয়ে যবে মৃদু মন্দ হাসি
প্রিয়দেহে প্রণয়িনী, প্রণয়-কৌতুকে,
ফুলশর! তুমি, দেব, ভীম প্রভঞ্জন,
ভগ্ন তরুকুল যার ভীষণ নিশ্বাসে,
তুঙ্গ গিরিশৃঙ্গ, বলী বিরিঞ্চির বলে
তুমি, জলস্রোতঃ যথা পর্ব্বত-প্রসাদে।
অতএব দেখ সবে করি বিবেচনা,
দেবদল। বাড়বাগ্নি-সদৃশ জ্বলিছে
কোপানল মোর মনে! এ ঘোর সংগ্রামে
ক্ষত এ শরীর, দেখ, দৈত্য-গ্রহরণে,
দেবেশ, কিন্তু কি করি? এ ভৈরব পাশ,
ম্রিয়মাণ—মন্ত্রবলে মহোরগ যেন।”
তবে অলকার নাথ, এ বিশ্ব যাঁহার
রত্নাগার, উত্তরিলা যক্ষদলপতি;—
“নাশিতে ধাতার সৃষ্টি, যেমন কহিলা
প্রচেতা, কাহার সাধ্য? তবে যদি থাকে
এ হেন শকতি কারো, কেমনে সে জন,
দেব কি মানব, পারে এ কর্ম্ম করিতে
নিষ্ঠুর? কঠিন হিয়া হেন কার আছে?
কে পারে নাশিতে তোরে, জগৎজননি
বসুধে, রে ঋতুকুলরমণি, যাহার