ধনদ অলকানাথ, প্রবেশ করিলা
ব্রহ্মপুরে—মোক্ষধাম, জগত-বাঞ্ছিত।
তবে চিত্ররথ রথী গন্ধর্ব্ব-ঈশ্বর
মহাবলী, দেবদত্ত শঙ্খ ধরি করে,
ধ্বনিলা সে শঙ্খবর। সে গভীর ধ্বনি
শুনিয়া অমনি তেজস্বিনী দেবসেনা
অগণ্য, দুর্ব্বার রণে, গরজি উঠিলা
চারি দিকে। লক্ষ লক্ষ অসি, নাগরাশি
উদ্গারি পাবক যেন, ভাতিল আকাশে!
উড়িল পতাকাচয়, হায় রে, যেমতি
রতনে রঞ্জিত-অঙ্গ বিহঙ্গম-দল!
উঠি রথে রথী দর্পে ধনু টঙ্কারিলা
চাপে পরাইয়া গুণ; ধরি গদা করে
করিপৃষ্ঠে চড়ে কেহ, কেশরী যেমতি
চড়ে তুঙ্গ-গিরি-শৃঙ্গে; কেহ আরোহিলা,
(গরুড়-বাহনে যথা দেব চক্রপাণি)
অশ্ব, সদাগতি সদা বাঁধা যার পদে!
শূল হস্তে, যেন শূলী ভীষণ নাশক,
পদাতিক-বৃন্দ উঠে হুহুঙ্কার করি,
মাতি বীরমদে শুনি সে শঙ্খনিনাদ!
বাজিল গম্ভীরে বাদ্য, যাব ঘোর রোল
শুনি নাচে বীর-হিয়া, ডমরুর রোলে
নাচে যথা ফণিবর—দূরন্ত দংশক—
বিষাকর; ভীরু প্রাণ বিদরে অমনি
মহাভয়ে! সুর-সৈন্য সাজিল নিমিষে,
দানব-বংশের ত্রাস, রক্ষা করিবারে
স্বর্গের ঈশ্বরী দেবী পৌলোমী সুন্দরী,
আর যত স্বরনারী; যথা ঘোর বনে
মহা মহীরুহব্যূহ, বিস্তারিয়া বাহু
অযুত, রক্ষয়ে সবে ব্রততীর কুল,
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৬৪
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
৪৭৮—৫০৭