অমৃত-ভাষিণী, লয়ে দেবপতিদলে
প্রবেশিলা মন্দগতি ধাতার মন্দিরে
নতভাবে। কনক-কমলাসনে তথা
দেখিলেন দেবগণ স্বয়ম্ভূ লোকেশে!
শত শত ব্রহ্ম-ঋষি বসেন চৌদিকে,
মহাতেজা, তেজোগুণে জিনি দিননাথে,
কাঞ্চন-কিরীট শিরে! প্রভা আভাময়ী,—
মহারূপবতী সতী,—দাঁড়ান সম্মুখে—
যেন বিধাতার হাস্যাবলী মূর্ত্তিমতী!
তাঁর সহ দাড়ান সুবর্ণবীণা করে,
বীণাপাণি, স্বরসুধা-বর্ষণে বিনোদি
ধাতার হৃদয়, যথা দেবী মন্দাকিনী
কলকল-রবে সদা তুষেন অচল-
কুল-ইন্দ্র হিমাচলে—মহানন্দময়ী!
শ্বেতভুজা, শ্বেতাজে বিরাজে পা দুখানি,
রক্তোৎপল-দল যেন মহেশ-উরসে;—
জগৎ-পূজিতা দেবী——কবিকুল-মাতা।
হেরি বিরিঞ্চির পাদ-পদ্ম, সুরদল,
অমনি শচী-রমণ সহ পঞ্চ জন—
নমিলা সাষ্টাঙ্গে। তবে দেবী আরাধনা
যুড়ি কর কলস্বরে কহিতে লাগিলা;—
“হে ধাতঃ, জগত-পিতঃ, দেব সনাতন,
দয়াসিন্ধু! সুন্দ-উপসুন্দাসুর বলী,
দলি আদিতেয়-দলে বিষম সংগ্রামে,
বসিয়াছে দেবাসনে পামর দেবারি,
লণ্ডভণ্ড করি স্বর্গ,—দাবানল যথা
বিনাশে কুসুমে পশি কুসুমকাননে
সর্ব্বভুক্! রাজ্যচ্যুত, পরাভূত রণে,
তোমার আশ্রয় চায় নিরাশ্রয় এবে
দেবদল,—নিদাঘার্ত্ত পথিক যেমতি
পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৭২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
১১৮—১৪৭