বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮—১৭৭
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য : তৃতীয় সর্গ
৫১

তরুবর পাশে আসে আশ্রম-আশায়।—
হে বিভো জগৎযোনি, অযোনি আপনি,
জগদত্ত নিরন্তক, জগতের আদি
অনাদি! হে সর্ব্বব্যাপি, সর্ব্বজ্ঞ, কে জানে
মহিমা তোমার? হায়, কাহার রসনা,—
দেব কি মানব,—গুণকীর্ত্তনে তোমার
পারক? হে বিশ্বপতি, বিপদের জালে
বদ্ধ দেবকুলে, দেব, উদ্ধার গো আজি।”
এতেক নিবেদি তবে দেবী আরাধনা
নীরব হইলা, নমি ধাতার চরণে
কৃতাঞ্জলিপুটে। শুনি দেবীর বচন—
কি ছার তাহার কাছে কাকলী-লহরী
মধুকালে?—উত্তর করিলা সনাতন’
ধাতা; “এ বারতা, বৎসে, অবিদিত নহে।
সুন্দ উপসুন্দাসুর দৈব-বলে বলী;
কঠোর তপস্যাফলে অজেয় জগতে।
কি অমর কিবা নর সমরে দুর্ব্বার
দোঁহে! ভ্রাতৃভেদ ভিন্ন অন্য পথ নাহি,
নিবারিতে এ দানবদ্বয়ে। বায়ু-সখা
সহ বায়ু আক্রমিলে কানন, তাহারে
কে পারে রোধিতে,—কার পরাক্রম হেন?”-
এতেক কহিলা দেবদেব প্রজাপতি।
অমনি করিয়া পান ধাতার বচন-
মধু, ব্রহ্ম-পুরী সুখতরঙ্গে ভাসিল!
শোভিলা উজ্জ্বলতরে প্রভা আভাময়ী,
বিশাল-নয়না দেবী! অখিল জগত
পূরিল সুপরিমলে, কমল কাননে
অযুত কমল যেন সহসা ফুটিয়া
দিল পরিমল-সুধা সুমন্দ অনিলে!
যথায় সাগর-মাঝে প্রবল পবন