বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য - মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৯৬১).pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
মধুসূদন-গ্রন্থাবলী
১৭৮—২০৭

বলে ধরি পোত, হার, ডুাইতেছিলা
তারে, শান্তি-দেবী তথা উতরি সত্বরে,
প্রবোধি মধুর ভাষে, শান্তিলা মারুতে।
কালের নশ্বর শ্বাস-অনলে যেখানে
ভস্মময় জীবকুল (ফুলকুল যথা
নিদাঘে) জীবনামৃত-প্রবাহ সেখানে
বহিল, জীবন দান করি জীবকূলে,—
নিশির শিশির-বিন্দু সরসে যেমতি
প্রসূন, নীরস, মরি, নিদাঘ-জ্বলনে!
প্রবেশিলা প্রতি গৃহে মঙ্গল-দায়িনী
মঙ্গলা! সুশস্যে পূর্ণা হাসিলা বসুধা;—
প্রমোদে মোদিল বিশ্ব বিস্ময় মানিয়া!
তবে ভক্তি শক্তীশ্বরী সহ আরাধনা,
প্রফুল্লবদনা যথা কমলিনী, যবে
ত্বিষাম্পত্তি দিননাথ তাড়াই তিমিরে,
কনক-উদয়াচলে আসি দেন দেখা,—
লইয়া দিক্‌পালদলে, যথাবিধি পূজি
পিতামহে, বাহিরিলা ব্রহ্মালয় হতে।
“হে বাসব,” কহিলেন ভক্তি মহাদেবী,
“সুরেন্দ্র, সতত রত থাক ধর্ম্মপথে।
তোমার হৃদয়ে, যথা রাজেন্দ্র-মন্দিরে
রাজলক্ষ্মী, বিরাজিব আমি হে সতত।”
“বিধুমুখী সখী মম ভক্তি শক্তীশ্বরী,”—
কহিলেন আরাধনা মৃদু মন্দ হাসি—
“বিরাজেন যদি সদা তোমার হৃদয়ে,
শচীকান্ত, নিতান্ত জানিও আমি তব
বশীভূতা! শশী যথা কৌমুদী সেখানে।
মণি, আভা, একপ্রাণা; লভ এ রতনে,
অযতনে আভা লাভ করিবে, দেবেশ!
কালিন্দীরে পান সিন্ধু গঙ্গার সঙ্গমে।”